সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
13 May 2025 04:03 am
![]() |
৭১ভিশন ডেস্ক:-রোববার ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে ঢাকার তাপমাত্রা যা নগরবাসীর জন্য অসহনীয়ই বটে। এমন কাঠপোড়া রোদ মাথায় নিয়ে জীবনের তাগিদে ছুটতে হচ্ছে শহরবাসীকে।
শুধু রাজধানীতেই নয় তাপমাত্রা পাল্লা দিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় বেড়েই চলেছে।
গত কয়েকদিন ধরে রংপুরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে, রংপুরের দুপুরের দৃশ্যটা অনেকটাই আগুনের ফুলকির মতো। গরম বাতাসে হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
গত দুইদিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে অন্তত ১০জন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, এবার রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা প্রতিদিনই বাড়ছে। রোববার (১১মে) দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। আর এ তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও বালুভাজা গরম পড়েছে রাজশাহীতে। টানা তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। মাথার ওপর থাকা নীল আকাশটা যেন তপ্ত কড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। প্রকৃতিতে বয়ে চলা গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মত। সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একই মাত্রাই তাপ নামছে। রোজ সকাল ১০টা বাজতেই তাপমাত্রার পারদ গিয়ে উঠছে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে। বেলা ৩টা গড়ালে সেই তাপমাত্রা পৌঁছাচ্ছে ৪০ ডিগ্রির ঘরে। আর প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
রোববার বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাজশাহী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখন ৪১ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে তীব্র রোদ-গরমে অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর জনজীবন। মানুষের পাশাপাশি এখন পশু-পাখিও হাঁসফাঁস করছে। বিবর্ণ হয়ে উঠেছে সবুজ প্রকৃতি। চারিদিকে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) রহিদুল ইসলাম জানান, গেল কয়েকদিন ধরেই রাজশাহীর তাপমাত্রার পারদ কেবল ওপরে উঠছে। তাই ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত এই তাপমাত্রা প্রশমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, রোববার বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শনিবার (১০ মে) বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অন্যান্য অঞ্চলে যখন তাপমাত্রার পারদ ওঠানামা করছে। তখন সিলেটে গরম রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। সকাল ও রাতে বৃষ্টির ফলে এখনো তাপদাহের প্রভাব পড়েনি দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল সিলেটে। প্রকৃতিতে কখনো বৃষ্টি কিংবা বজ্র বৃষ্টি হচ্ছে। কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে মাড়াই দিয়েছেন। তবে গুটি ধান শুকানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। রোদ, বৃষ্টির লুকোচুরিতে ধান শুকানো নিয়ে বিড়ম্বনায় রয়েছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।
রোদের মাঝেও হঠাৎ আকাশে মেঘের ঘনঘটা, ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে সিলেটের প্রকৃতি। তারপরও ভর দুপুরে রয়েছে ভ্যাপসা গরম। এই গরমে ভুগতে হয় শ্রমজীবীদের। রোববার (১১ মে) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরপর বেলা গড়াতেই শুরু হয় ভ্যাপসা গরম। এছাড়া সন্ধ্যার পর সিলেটে হালকা বৃষ্টি হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে টানা তাপদাহের পর ময়মনসিংহে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে নাগরিক জীবনে উত্তাপ কমে স্বস্তি ফিরেছে। উপকূল অঞ্চল খুলনায় রোদ ও গরমের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। গত তিনদিন ধরে তীব্র দাবদাহ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে খুলনার জনজীবন। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপে পুড়ে ছারখার হয় প্রকৃতি ও প্রাণিকুল।
বরিশালেও তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এদিকে নগর জুড়ে অসহনীয় গরমে শ্রমজীবী মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সড়কে যানবাহন থেকে মানুষের উপস্হিতিও কম। আর চট্টগ্রামেও কয়েকদিনের কাঠফাটা প্রখর রোদ আর তীব্রগরমে অতিষ্ঠ মানুষ। কেন তাপমাত্রা দিনকে দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই সারাদেশ উত্তপ্ত আবহওয়ার মধ্য দিছে যাচ্ছে।
গবেষণা বলছে গত দশ বছরে দেশে গড় তাপমাত্রা প্রায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস মতো বেড়েছে। আর ঢাকাতে গত দশ বছরে সাড়ে ৪ ডিগ্রি।