শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
13 Apr 2025 02:35 am
![]() |
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,হিলি(দিনাজপুর) প্রতিবেদক:-দিনাজপুরের বিরামপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক সাংবাদিকের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুলের (৫৫) বিরুদ্ধে।গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনায় ওই সাংবাদিক বাদী হয়ে জাতীয় পার্টির ওই নেতার বিরুদ্ধে বিরামপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত, মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুল বিরামপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ইসলামপাড়া মহল্লার মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে।তিনি জাতীয় পার্টির বিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলার ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।অভিযোগকারী সাংবাদিক জাকিরুল ইসলাম (৩২) দৈনিক নয়া দিগন্ত ও সকালের সময়ের বিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুল ওই সাংবাদিকের প্রতিবেশী। সাংবাদিক তাঁর ক্রয় ও পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময় ধরে বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন।পরবর্তীতে ওই বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে জাতীয় পার্টি নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরোধ চলছিল।এরই ধারাবাহিকতায় মোস্তাফিজুর রহমান একাধিকবার ওই বসতবাড়ির সীমানাপ্রাচীর সংলগ্ন জমি জোরপূর্বক জবর দখলের চেষ্টা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে জাতীয় পার্টির নেতা ও তাঁর লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ওই সাংবাদিকের বাড়ির সীমানাপ্রাচীরটি ভেঙে দেন।ওই সীমানাপ্রাচীর থেকে সাংবাদিকের বাড়ির অভ্যন্তর অংশে জোরপূর্বক একটি পৃথক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন।পরে, ওই সাংবাদিক তাঁর বসতবাড়ির জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলে জাতীয় পার্টির ওই নেতা তাঁকে মারধর করেন এবং মাটিতে ফেলে দেন।
এ সময় সাংবাদিকের স্ত্রী তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।এছাড়া, সেখানে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কাজে ওই সাংবাদিক কোনো ধরনের বাধা দিলে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন জাতীয় পার্টির ওই নেতা।
উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল সকালে জাতীয় পার্টি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সেখানে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে, ওইদিন দুপুরে ওই সাংবাদিক এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নুজহাত তাসনীমের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে, ইউএনও পৌরসভার নকশাকার মো. মনিরুজ্জামানকে অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠান।নকশাকার ঘটনাস্থলে দু'পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে সময় জাতীয় পার্টির ওই নেতা মিমাংসায় রাজি হননি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির বিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজুলের বক্তব্য নেয়ার জন্য তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, বসতবাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেয়ার ঘটনায় এক সাংবাদিক গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগের ভিত্তিতে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে।তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।আর এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম ওরফে মামুনের সঙ্গে কথা বলার জন্য সাংবাদিককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে জানান থানার ওসি।