রবিবার, ০২ মার্চ, ২০২৫
03 Mar 2025 02:22 am
![]() |
স্টাফ রিপোর্টার:- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া হাটে অবস্থিত গড়েয়া মহিলা মার্কেট সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম উল্লেখ করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে বেশ কিছু নারীকে দেখা যায় ঐ মার্কেটে দোকান বরাদ্দের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করতে।ঐ ভিডিওতে তাদের অভিযোগ ছিলো নারী ব্যাতিত পুরুষদের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হইছে।নতুন কাউকে বরাদ্দ দিলে ওই নারীদের বরাদ্দ দেওয়া হবে এমন আস্বাস দিয়েছিলেন ইউএনও, এছাড়াও আগের সুবিধা ভোগীদের পুনরায় দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি। তবে প্রচারিত ভিডিওর শিরোনামে দূর্নীতি ও অনিয়মের কথা লেখা থাকলেও ভিডিওতে এই বিষয়ের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রমাণ নাই।
এদিকে গড়েয়া মার্কেটের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের কমিউনিটি অরগানাইজার(সিও) জনাব মো: হাফিজুর রহমানের সাথে এই বিষয় সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদককে তিনি জানান, "এই মার্কেটে ১০টি দোকান রয়েছে। সেগুলা আনুমানিক ২৩ বছর আগে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো।মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী বরাদ্দ প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের পূর্বের বকেয় পরিশোধ করার কারণে আইনগত ভাবেই তারা দোকান প্রাপ্য। তাই তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই আবেদন করেছিলো যাদেরকে আইনগত কারনে দোকান দেওয়া সম্ভব হয়নি। "
উক্ত মার্কেটের বরাদ্দ গ্রহীতা এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদক কে জানান যে, "৫ আগস্ট পরবর্তী সময় হওয়ার কারণে এখানে ত্রিমুখী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়। যে যার মত নিজের লোকজন কে দোকানের বরাদ্দ নিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করে।কিছু মারামারির ঘটনাও ঘটে। থানায় দুইটা মামলাও হয়েছে। সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও বেলায়েত সাহেব সম্পূর্ণ বে-আইনী ভাবে বিনা নোটিশে আমাদের বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করে। আপনিই বলেন দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে আমরা এই মার্কেটে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছি। হঠাৎ করে বরাদ্দ বাতিল হলে আমাদের পরিবার কিভাবে বাচবে? আর বকেয়া আছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা, এতো গুলো টাকা কিভাবে শোধ করবো? পরে নতুন ইউএনও সাহেব এগুলো শোনার পর নিজেই পরিদর্শন করে সরেজমিন দখল অনুযায়ী নতুন করে বরাদ্দ হালনাগাদ করে দেন। এখন আমাদের ১০টি পরিবারই খুশি"।
উপজেলা হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম কে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বিষয় গুলো স্পষ্ট করে প্রতিবেদক কে জানান, "বেশ কিছু নারী সেখানে দোকান বরাদ্দ চেয়েছিলো, কিন্তু যারা ২৩ বছর ধরে দোকান করে আসছে তাদেরকে নতুন আবেদনকারীদের কথায় রাতারাতি উচ্ছেদ করার সুযোগ নেই। নতুন যোগদান করার সুবাদে অনেক বিষয় অজানা ছিলো আমার, তাই তাদের আমি আসতে বলেছিলাম। তাছাড়া কারো বরাদ্দ বাতিল হলে তাদের বৈধ ওয়ারিশানদের মধ্য থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দিতে হবে মর্মে পরিপত্রে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।"
তিনি আরও জানান, "পরিপত্রের বাইরে গিয়ে মৃত ব্যক্তি কিংবা পুরুষ মানুষ কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই আইন অনুযায়ী।কমিটির সদস্যরা সর্ব সম্মতিক্রমে যাদের বরাদ্দ রিনিউ করেছে তারা সবাই মহিলা এবং তাদের সবাই জীবিত।কিছু পুরাতন বরাদ্দ গ্রহীতার মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন,সেক্ষেত্রে তাদের বৈধ ওয়ারিশানদের মধ্যে যারা মহিলা তাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে এভাবে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়ে আমাকে হেয় করা হয়েছে।এই বিষয় সম্পর্কে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে মর্মে জানানো হয়েছে।অনিয়ম দুর্নীতির এমন ভিত্তিহীন বানোয়াট খবর বেদনাদায়ক ও মানহানিকর বটে।"