মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
01 Mar 2025 03:48 am
![]() |
শরীয়তপুর প্রতিনিধি:- দীর্ঘদিন ধরে ময়লার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত শরীয়তপুর পৌরসভার একটি স্থান এখন হাজারো সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্যে মোড়ানো এক মনোরম প্রাঙ্গণ। পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে পরিত্যক্ত সেকেন্ডারি ডাম্পিং জোন পরিষ্কার করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে সূর্যমুখীর ক্ষেত, যা এখন এলাকাবাসীর বিনোদনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই জায়গাটি একসময় দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার স্তুপে ভরা ছিল, যেখানে পথচারীদের চলাচল ছিল কষ্টকর। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পিংকি সাহা পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন, এ স্থানটিকে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। তার উদ্যোগে প্রায় ৪৪ শতক জমি পরিষ্কার করে সেখানে সূর্যমুখীর আবাদ শুরু হয়। নিয়মিত পরিচর্যার ফলে কিছুদিনের মধ্যেই ফুটে ওঠে অসংখ্য সোনালি রঙের ফুল।
এখন প্রতিদিন নানা বয়সী মানুষ সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ আসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে, আবার অনেকেই ছবি তুলতে আসছেন ক্যামেরা হাতে। দর্শনার্থীদের মতে, এই উদ্যোগ শুধু পরিবেশগত উন্নয়নই নয়, শহরের সৌন্দর্যবর্ধন ও বিনোদনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এক বাসিন্দা বলেন, “আগে এখানে হাঁটাও কষ্টকর ছিল দুর্গন্ধের জন্য। এখন জায়গাটি এত সুন্দর হয়ে গেছে যে, মনে হয় কোনো বিনোদন কেন্দ্রে এসেছি। পৌরসভার এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”
অন্য একজন বলেন, “শুধু সৌন্দর্যই নয়, এই সূর্যমুখী থেকে তেলও পাওয়া যাবে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ ধরনের উদ্যোগ আরও এলাকায় নেওয়া উচিত।” এক শিক্ষার্থী জানান, “ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে আজ বন্ধুদের নিয়ে এসেছি। আশা করি, প্রতিবছর এখানে সূর্যমুখীর আবাদ করা হবে।”
পৌর প্রশাসক পিংকি সাহা বলেন, “পৌরসভা নাগরিক সেবাকেন্দ্র হওয়ায় আমরা চাইছিলাম, জায়গাটি মানুষের জন্য ব্যবহারযোগ্য হোক। তাই এটি গ্রিনস্পেস হিসেবে গড়ে তুলতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। এখন শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই নয়, বাইরের মানুষও এখানে আসছেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে, যা আমাদের জন্য আনন্দের।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, “সূর্যমুখী তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আমরা কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করি। এই উদ্যোগ মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”পরিত্যক্ত ময়লার ভাগাড় থেকে ফুলের বাগান—শরীয়তপুর পৌরসভার এই উদ্যোগ এখন অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। পৌরবাসী আশা করছেন, এমন সবুজায়ন প্রকল্প আরও সম্প্রসারিত হবে, যাতে শহর আরও পরিচ্ছন্ন ও মনোরম হয়ে ওঠে।