রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
24 Feb 2025 05:02 am
![]() |
৭১ভিশন ডেস্ক:- অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি মোঃ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনুন। মানুষ সংস্কার বোঝেনা, তারা পরিবার বোঝে। অতএব, সংস্কার সংস্কার করে সময় ক্ষেপণ করবেন না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখুন।
তাই গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।তিনি বলেন, বাংলাদেশে থেকে স্বৈরাচার চলে গেছে, এখনো কেন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। অবিলম্বে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম কমাতে হবে। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের ছয় মাস পার হলেও আইন-শৃংখলার উন্নতি হয়নি। প্রতিদিন দেখছি দেশে চুরি ডাকাতি খুন, গুম ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মানুষ। পলাতক শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। অবিলম্বে শেখ হাসিনা ও তার দুর্নীতিবাজ পরিবারের সদস্য এবং তার লুটেরা বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশ সংস্কারের কথা সর্বপ্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছিল। দেশের প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধবগতি সহনীয় পর্যায় রাখা, অবণতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দাবিতে ২৩ ফ্রেরুয়ারী রবিবার বিকালে আজাদী ময়দানে রাজবাড়ী জেলা বিএনপি আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে, দেশের সকল সেক্টরকে ধ্বংশ করেছে। বিএনপির ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম, খুন ও পুঙ্গু করেছে। তাই দেশের সর্বস্থরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এর সমাধান সম্ভব নয়। বিগত ১৭ বছরের গুম-খুনের নায়িকা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অনেক হিসাব বাকি রয়েছে।
এখনও তার দোসররা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বসে আছে। এদের খুঁজে বের করতে হবে। না হলে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করা সম্ভব হবে না। ৫ আগস্টে কৃষক শ্রমিক ছাত্র জনতা আন্দোলন করে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বৈরাচার কে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। বিশ্বের মানুষ জানে সর্বস্বক্ষিত এই আন্দোলনে মহানায়ক ছিলেন এদেশ, এ যুগের শ্রেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান। এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে আমরা সকল রাজনৈতিক দল এবং মানুষ তাদেরকে সমর্থন করেই আমরা বসিয়েছি। আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন। আমরা এ সরকারের বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলন করতে চাই না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেল হোক আমরা তাও চাই না। আমরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সাহায্য করতে চাই। জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে সাহায্য সহযোগিতা যা কিছু করার দরকার বিএনপির সেটা করবে। সাবেক এমপি লালু বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল আরো অনেক তৈরি হতে পারে, সেটি নিয়ে বিএনপি চিন্তিত নয়।
আমরা শুনেছি নতুন দল হচ্ছে, আমাদের দলের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছে। আমরা হুশিয়ার করে দিতে চাই পতিত সরকার কোন দোসর যদি ছদ্মবেশে কোন রাজনৈতিক দলে প্রবেশ করে তাহলে এদেশের মানুষ তাদেরকে ছাড়বে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে চলে গেলে তাদের লক্ষ লক্ষ নেতা কর্মী খুন হবে, কিন্তু এদেশের মানুষ ধৈর্য ধরেছে শৃঙ্খলা রক্ষা করেছে তারেক রহমান নির্দেশে এদেশের মানুষ ছাত্র-জনতা থানা পাহারা দিয়েছে। যদি আবার এই স্বৈরাচার গোষ্ঠী কোন রাজনৈতিক দলে হয়ে মাঠে নামতে চাই তাদেরকে রাস্তায় প্রতিহত করা হবে। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কষ্ট পদ্মা নিয়ে আর উত্তরের মানুষের কষ্ট তিস্তা নিয়ে। প্রতিনিয়ত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাত্র যুবকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছেন, আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে।
মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে, এমন কোন কাজ করা যাবে না যাতে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়। আওয়ামী লীগের ইতিহাস পলায়নের ইতিহাস। তার পিতাও স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। ৬৯ সালেও মাত্র ১৭ ঘণ্টায় একদলীয় বাকশাল কায়েমের করেছিলেন তার পিতা। পরবর্তীতে শেখ হাসিনাও ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিনের ভোট রাতে এবং আমি আর ডামি নির্বাচনের নামে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করেছিলেন। তাকে এদেশের মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। সাবেক এমপি লালু আরো বলেন,বাংলাদেশের চলমান সকল অব্যবস্থাপনা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য ঘোষিত ৩১ মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। দেশকে সুস্থধারায় ফিরে আনতে তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছেন টেকব্যাক বাংলাদেশ। আরেকটি স্লোগান দিয়েছে ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে। হাসিনা পালিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের টেক ব্যাক বাংলাদেশ কর্মসূচি দেশের মানুষকে জাগ্রত করেছিলো। তাই তিনি দেশের সকল মানুষের সহযোগিতা নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চান। যার মাধ্যমে দেশের সকল নাগরিক একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার পাবেন।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ যদি চান এবং দেশের মানুষ যদি আমাদের ওপর আস্থা রাখেন তাহলে আগামী দিনে দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী হবেন এ যুগের এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান। ইনশাআল্লাহ। রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবুর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাসুকুর রহমান, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম,বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম আর ইসলাম স্বাধীন,রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া, রাজবাড়ী জেলা বিএনপি সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল আলম। জনসভায় সঞ্চালনা করেন রাজবাড়ী জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আকরাম হোসেন ও যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম পিন্টু।