বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
13 Feb 2025 07:09 pm
[ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫] ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গতকাল বাংলাদেশে স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-২৫-এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা,ও কমিউনিটি লিডার হিসেবে অসাধারণ সাফল্যের জন্য এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিজয়ীদের এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সরকারি, বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সংস্থার সম্মানিত প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ইউকে অ্যালামনাইরা উপস্থিত ছিলেন।
বিচারক প্যানেল চারটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নির্বাচন করেন, যথা: সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি অ্যাওয়ার্ড, সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড, কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ড ও বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড।
সম্মানসূচক এ আন্তর্জাতিক পুরস্কারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা সুবিধা এবং বিশ্বব্যাপী ইউকে অ্যালামনাইদের অনন্য সব অর্জন উদযাপন করা হয়। এবারে ১১তম বর্ষে পদার্পণ করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই পুরস্কারের জন্য চলতি বছরে ১শ’রও বেশি দেশের প্রায় ১২০টি ইউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের কাছ থেকে ১৩ শ’র বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের শিক্ষা উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশে স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-২৫-এর চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের নামের তালিকা:
বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড: সৈয়দ এম ইসতিয়াক, ইউনিভার্সিটি অব স্টার্লিংয়ের স্নাতক, বাংলাদেশের মৎস্য খাতে একজন শীর্ষ টেকনোবিজনেস উদ্যোক্তা।
কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ড ড. শাহমান মৈশান , যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের শেক্সপিয়ার ইনস্টিটিউট থেকে পলিটিকাল শেক্সপিয়র ও ইন্টারকালচারাল পারফরম্যান্সে পিএইচডি ডিগ্রিধারী।
সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি অ্যাওয়ার্ড: ড. এম তাসদিক হাসান, কিংস কলেজ লন্ডন এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন থেকে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ বিষয়ে এমএসসি সম্পন্নকারী।
সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড শামসিন আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা থেকে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড সোসাইটি বিষয়ে এমএসসি সম্পন্নকারী।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, “এবছরের স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডসে মনোনয়নপ্রাপ্ত এবং বিজয়ী সকলকে অভিনন্দন। আজ আমরা অত্যন্ত গর্বের সাথে বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন, সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি, কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি ও সোশ্যাল অ্যাকশন ক্যাটাগরিতে তাদের অসাধারণ সাফল্য উদযাপন করছি। তাদের অর্জন যুক্তরাজ্যের শিক্ষার উৎকর্ষ এবং উদ্ভাবনী শক্তির প্রতিফলন। আমি সকল অ্যালামনাইকে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যালামনাই ইউকে’-তে যুক্ত হতে আহ্বান জানাই। এ প্ল্যাটফর্ম বিশ্বব্যাপী ইউকে অ্যালামনাইদের জন্য নেটওয়ার্কিং, সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়নের বিশেষ সুযোগ প্রদান করে।”
বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী সৈয়দ এম ইশতিয়াক কমনওয়েলথ স্কলার ও টেকনোবিজনেস উদ্যোক্তা, যিনি বাংলাদেশের মৎস্য খাতে রীতিমতো বিপ্লব ঘটাচ্ছেন। অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি ভ্যালু-অ্যাডেড সি ফুড, ডব্লিউএসএসভি-নেগেটিভ পিএল প্রোডাকশন ও নিরাপদ শুঁটকি মাছ বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখছেন। তিনি এএসএপি-এইচএফএল’র প্রতিষ্ঠাতা ও এসিআইএঅ্যাগ্রোলিংক -এর বিজনেস ডিরেক্টর। পাশাপাশি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়, অ্যাকাডেমিয়া ও অন্যান্য বিভিন্ন পেশাদার সংস্থায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি। এআইএমএস ল্যাব এবং ইউআইইউ’র প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ এম ইশতিয়াকের নামে ২শ’রও বেশি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে এবং তিনি অসংখ্য পেটেন্টেরও মালিক।
কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ড. শাহমান মইশান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।তিনি একাধারে একজন গবেষক, নাট্যকার ও পরিচালক, যিনি পোস্টকলোনিয়াল বাংলাদেশের আধুনিক নাট্যধারা নিয়ে কাজ করছেন।তিনি শেকড়, ইতিহাস ও উপস্থাপনার শক্তির গভীর বিশ্লেষণের মাধ্যমে “কালেক্টিভ আনকনশাস” এর ধারণা অনুসন্ধান করেন।তিনি শেকসপিয়ার ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ড. এম তাসদিক হাসান বাংলাদেশে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথের পথিকৃৎ। তিনি ডিজিটাল উদ্ভাবন ও পরামর্শের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে জোরদার করে তুলেছেন।
কানাডার মেন্টাল হেলথ কমিশনের স্বীকৃত গবেষক হিসেবে তিনি বাংলাদেশের শ্রবণ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন নতুন সুবিধার উন্নয়ন করছেন।তার ১ শ’রও বেশি প্রকাশনা রয়েছে, এবং তিনি গবেষণা, পরামর্শ, ও নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে অবদান রাখছেন।
সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী শামসিন আহমেদ ‘আইডেন্টিটি ইনক্লুশন’ -এর প্রতিষ্ঠাতা, প্রধান নির্বাহী ও প্রধান পরামর্শক। তিনি তরুণদের নেতৃত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য কাজ করছেন। চিভনিং স্কলার হিসেবে তিনি তরুণদের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি তরুণদের পরিবার-পরিজনদের সাথে যুক্ত থাকতে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করেন। কমিউনিটি-ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তিনি ২ হাজারের বেশি অ্যাডভোকেটকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং উন্নয়ন পরামর্শক হিসেবে তার কাজ লাখো মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।