বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
13 Feb 2025 12:58 pm
![]() |
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ-শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের খামখেয়ালিপনায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুর চন্দ্র কিশোর স্কুল এন্ড কলেজের ৪ তলা ভবন নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্ণীতির অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
১২ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকালে সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, ২০২০ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বাসুদেবপুর সিকে স্কুল এন্ড কলেজের ৪ তলা ভবন নির্মান কাজের শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য এ্যাড: উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি।
নির্মান কাজের শুরু থেকেই ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঐশি কনস্ট্রাকশন বগুড়া।
রাতের অন্ধকারে প্রতিনিয়তই ভবন নির্মান কাজ করা হতো।এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ছাদ ও লিনটনের ঢালাই কাজে রডের পরিবর্তে বাশের কঞ্চি ও কাঠ ব্যবহার করা হয়।বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আসলে তারা ব্যাপক প্রতিবাদ জানায়।একপর্যায়ে নির্মাণাধীন ভবনের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে বিক্ষুব্ধ জনতা।পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঐশি কনস্ট্রাকশন কাজ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।এ ব্যাপারে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
১ বছর ৬ মাস সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও এ ভাবে ৪ বছর অতিবাহিত করা হয়।
গত জুলাই অভুত্থানের সরকার পতনের পর কতিপয় ব্যাক্তিকে ম্যানেজ করে ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান আবারো ওই ভবনের নির্মান কাজ শুরু করেন।
বাসুদেবপুর গ্রামের শামিম মিয়া জানান,প্রতিষ্ঠানের পাশেই বাড়ী হওয়ায় এক দিন রাতে হইচই শুনে সামনে এগিয়ে দেখি রডের পাশাপাশি কাঠের বাতি ও বাশের কঞ্চি দিয়ে ঢালাই করা হচ্ছে। পরে এলাকাবাসী সবাই কাজে বাধা দিয়ে সব ভেঙে দেয়।এছাড়াও রয়েছে নিম্ন মানের ইট বালু।
রডের পরিবর্তে কঞ্চি ও কাঠ ব্যবহারের কারনে এই প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজ দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিলো।দীর্ঘ দিন পর ঠিকাদার সবাইকে ম্যানেজ করে আবারো নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করেছে।আগের ঘটনার জন্য কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় নি।
বাসুদেবপুর বাজারের ব্যবসায়ী লিমন ফারাজি বলেন, ভবন নির্মানের ছাদ ঢালাইয়ের সময় কঞ্চি ব্যবহার করা হলে এলাকাবাসী হিসেবে আমরা বাধা প্রদান করি।রডের পরিবর্তে কঞ্চি ব্যাবহারের সত্যতা পাই।এ ব্যাপারে আমি ফেসবুক লাইভ করেছিলাম।দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর কাজটি আবারো চালু করা হয়েছে।
কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মালিক জানান,দিনে কাজ করতে সমস্যা হয় কারনে কিছু দিন রাতে কাজ করেছি।মিস্ত্রি ও লেবার কিছু রড বিক্রি করে এমনটা করেছিলো আমার অজান্তে। আমরা ইচ্ছে করলেও শতভাগ কাজ করতে পারি না।বিভিন্ন যায়গায় টাকা পয়সা দিতে হয়।আপনিও আসেন আপনার চা খাওয়ার দাওয়াত।
উপ সহকারী প্রকৌশলী সিভিল পলাশবাড়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত আতিকুর রহমান বলেন,আমি কিছু দিন হয় যোগদান করেছি। আপনারা অনিয়ম তুলে ধরলে আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর গাইবান্ধাব নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, কাজে অনিয়মের বিষয়টি আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় তত্বাবধায়ক তারেক আনোয়ার জাহেদী বলেন,কাজে অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসী প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবন নির্মান কাজে অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।