সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
11 Feb 2025 06:31 pm
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ- রংপুরের পীরগঞ্জে গত শুক্রবার সকালে মস্তকবিহীন এক মহিলার লাশ উদ্ধারের এক দিন পর শনিবার বিকেলে ওই লাশের খন্ডিত মাথা উদ্ধার হয়।এর দুইদিন পর নিহতের পাঁচ বছরের কন্যা সন্তান সায়মার গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘাতক আতিকুলরে স্বীকারোক্তি মূলে গতকাল রোববার উপজেলার চতরা ইউপির বড় বদনাপাড়া গ্রামের ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়ির পেছনে গাছ বাগানের ভিতরে পুতে রাখা গর্ত থেকে সায়মার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।সহকারি পুলিশ সুপার ডি-সার্কেল আছিফা আফরোজা আদুরি বলেন,নিহত দেলোয়ারার স্বামী গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিম পুলিশের কাছে জানান, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী দেলোয়ারার সাথে তার কন্যা সায়মাও ছিল।সায়মার সন্ধান জানতে চান তিনি।পুলিশ ঘাতক আতিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানতে পারেন, দেড়মাস আগে শিশু সন্তান সায়মাকে হত্যার পর লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পিছনে পশ্চিমদিকে গাছের বাগানে গোবরের স্তুপের পাশে ৩/৪ফিট গর্ত করে পুতে রাখে।
ঘাতক আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পরে ঘাতকের তথ্যমতে বর্ণিত স্থান থেকে শিশু সায়মার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে মর্গে পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে বড় বদনাপাড়ায় এক নারী শ্রমিক মরিচ তুলতে গিয়ে মস্তকবিহীন মহিলার লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দেয়। সিআইডি ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার নাম দেলোয়ারা (৩১) বলে জানা সম্ভব হয়। নিহত মহিলা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী।
নীলফামারীর জলঢাকার পশ্চিম গোরমুক্তা গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে সে। শনিবার চতরা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীরে পাকার মাথা টোংরারদহ এলাকা থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়।এতে জড়িত থাকার অভিযোগে বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলী মন্ডলের ছেলে আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশের এসআই অনন্ত কুমার বর্মণ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।পুলিশের একটি দল বস্তা ও ব্যাগে ভর্তি ছবি, সিমকার্ড, কাগজে লিখিত কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর পেলে নারীর পরিচয় জানতে পারে।এক পর্যায়ে আতিকুলের গতিবিধিতে নজর রাখে তারা।
শনিবার সকালে বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় কাবিলপুর ইউপির ঘনশ্যামপুর সড়ক থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে খন্ডিত মাথা, শিশুর লাশের সন্ধান মিললে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দু’টি হত্যাকান্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি এমএ ফারুক। আতিকুল এলাকায় জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্বজনরা দেলোয়ারার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানালে শনিবার রাতে পুলিশের উদ্যোগে রংপুর সদরের মুন্সিপাড়া সরকারি কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। রোরবার দুপুরে উত্তেজিত এলাকাবাসি ঘাতক আতিকুলের বাড়ীতে আগুন দিয়েছে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর