সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫
13 Jan 2025 03:01 pm
পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধি:- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার অষ্টাদশ শতাব্দীর সাধক কবি কাজী হায়াত মামুদ এর সমাধীস্থল ও তৎসংলগ্ন ওয়াকফ এষ্টেটের সম্পদ এবং স্থান পরিচালনার জন্য এজাহারুল হককে মোতওয়াল্লী নিযুক্ত করা হয়েছে।অথচ সমাধীস্থল ও ওয়াকফ এষ্টেটের জমি নিয়ে বিরোধের কারনে এজাহারুল হক তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হচ্ছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ঝাড়বিশলা গ্রামের নুরুল হক দীর্ঘ দিন ধরে কাজী হায়াত মামুদ ওয়াকফ এষ্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করাবস্থায় বিগত ২০১২ সনে মৃত্যু বরণ করেন।তার মৃত্যুর পর প্রায় ১০ বছর উক্ত ওয়াকফ এষ্টেট মোতওয়াল্লী বিহীন অবস্থায় ছিল এবং হায়াত মামুদ এর সমাধিস্থল সহ সবকিছু সমাধিস্থল সংলগ্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে ছিল।এদিকে নিয়মানুযায়ী গত ২০২৩ সনের ফেব্রæয়ারীতে প্রয়াত নুরুল হকের পুত্র এজাহারুল হক উক্ত ওয়াকফ এষ্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ পেতে ঢাকাস্থ ওয়াকফ প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন।যার ইসি নং- ১৪২১৮।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত ও নিয়মানুযায়ী ২৫/০৬/২৪ ইং তারিখে ১৬.০২.০০০০.০৫৬. ৩১.০০০. ৫৩.১২৬ নং স্মারকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তানজিলা কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে এজাহারুল হককে ০৪/০৪/২৩ ইং হতে ৩ বছরের জন্য উক্ত এষ্টেটের মোতওয়াল্লী নিযুক্ত করা হয়।পত্রানুযায়ী এজাহারুল হক ঝাড়বিশলা মৌজার ১০৩৫ এবং ১০৩৭ দাগের জমির কাজী হেয়াত মামুদ এর সমাধীস্থল সহ ১একর ৯ শতক জমির মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কথা। অথচ এ দ্বায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হচ্ছেন।
অভিযোগে আরও জানা গেছে এজাহারুল হক মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর মাজার সংলগ্ন ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষের নিকট চাবী চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এক পর্যায়ে এজাহারুল হক ১৭ অক্টোবর ২৪ ইং এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কাগজপত্র য্চাাই সাপেক্ষে প্রশাসনিক সহযোগীতা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।পরবর্তিতে মাদ্রাসাটির তৎকালিন সভাপতি তাজিমুল ইসলাম শামীম ও মাদ্রাসাটির বর্তমান শিক্ষক শাহজাহান বাদশা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম এর কাছে উক্ত চাবী জিম্মায় রাখেন।এখনও উক্ত চাবী চেয়ারম্যানের হেফাজতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান শাহ্ বলেন, সমাধীস্থলের দ্বানবাক্স ও সমাধী গৃহটি নিয়ে জটিলতা হওয়ায় মাদ্রাসাটির তৎকালিন সভাপতি তাজিমুল ইসলাম শামীম দান বাক্স ও গৃহটির চাবী আমার জিম্মায় রেখেছেন। উক্ত চাবী এখনও আমার কাছে সংরক্ষিত আছে ।
এ ব্যাপারে ঝাড়বিশলা হায়াতুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সালেক সরকার বলেন, রংপুরের বিজ্ঞ জজ আদালতে ইতিপুর্বে কাজী শামস উদ্দি কবি হেয়াত মামুদ এর ওয়াকফ এষ্টেট যার ইসি নং-১৫৪৭০ এর মোতওয়াল্লী হিসেবে নিজেকে দাবী করে মামলা করেন।মামলা নং-২৬/১৯৭৫। আদালত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে মাজারের তদারকি ও ইছালে ছওয়ার পরিচালনার আদেশ দেন।উক্ত আদেশ অনুযায়ী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করে আসছে।অন্য দিকে শামসুুদ্দিন জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ হাইকোর্টে আপিল করেছেন।মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ।
এদিকে মোতওয়াল্লী এজহারুল হক বলেন, আমি ইসি নং ১৪২১৮ এর বৈধ দাবীদার।আমার সঙ্গে জমি নিয়ে কোন দালিলিক বিরোধ নেই।বিরোধ থাকতে পারে ১৫৪৭০ নং ইসির মোতওয়াল্লী কাজী শামস উদ্দিনে সাথে।সার্বিক এ পরস্থিতিতে এজহারুল হক কাজী হায়াত মামুদ এর সমাধীস্থল এর উন্নয়নের স্বার্থে তাহাকে নির্বিগ্নে মোতওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সহযোগীতার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর