মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
28 Dec 2024 01:26 am
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ গত ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিদায়ী কাহালু উপজেলা নির্বাহি অফিসার পাপিয়া সুলতানার নিকট হতে নবাগত উপজেলা নির্বাহি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে নেন মোছা. মেরিনা আফরোজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় সরকারি স্থাপনা ভাংচুর হলেও কিন্তু কাহালু উপজেলায় কোন সরকারি স্থাপনা ভাংচুর হয়নি। সরকার পতনের পর উপজেলার ২/৩টি প্রতিষ্ঠানে ঝামেলা শুরু হলে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে কথা বলে সেই সমস্যা সমাধান করেছেন।
তিনি এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সকলকে নিজের আপন ভেবে কাজ করেছেন এবং সেটা সবার চোখও পড়েছে। এই মানবতার ক্ষেত্রে চুল পরিমান ঘাটতি রাখেননি এই ইউএনও। সরকারি রুটিন ওয়ার্কে থেকেও সাধারণ মানুষের মন জয় করা একজন মানবিক উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) মোছা. মেরিনা আফরোজ। তিনি সরকারি সেবা সর্বসাধারণের দুয়ায়ে পৌঁছিয়ে দিতে নিজেকে আতœনিয়োগ করেছেন। ২ বছরে সময়ে তিনি তার কর্মের দ্বারা কাহালু উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মন জয় করেছেন।
যোগদানের প্রায় দেড় মাসের মাথায় বগুড়া-৪, কাহালু-নন্দীগ্রাম আসনের উপ-নির্বাাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন তিনি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০২৪ সালের ২১ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি যোগদানের পর বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের উপ-নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করেছেন তিনি। তিনি জাতীয় দিবসের প্রোগ্রাম সুন্দর ভাবে পালন করেছেন।
বগুড়ার কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজ দায়িত্বশীল কর্ম তৎপরতা বিগত বছরের তুলনায় হাট-বাজার, জলমহাল ইজারার সরকারি রাজস্ব আয় আদায় প্রায় দ্বিগুন এবং ভুমি হতে সরকারি রাজস্ব আয় আদায় দ্বিগুন করতে সমক্ষ হয়েছেন তিনি। কৃতি ছাত্র/ছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান, গরীব ছাত্র/ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের জন্য কনফোর্ট জোন প্রতিষ্ঠিত, বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষাণ-কৃষাণীর জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ, উপজেলা পরিষদ কোয়াটারের প্রাচীর নির্মাণ, উপজেলা পরিষদের পুকুর সংস্কার ও গাইড ওয়াল, কোয়ার্টারে শিশু পার্ক কার্যক্রম চলমার্ন, অফিসার্স ক্লাবের ঘর নির্মাণ চলমান, ব্যাডমিন্টন কোড স্থাপন, তিনি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর কাহালুর ৭১ স্মৃতিকথায় বই প্রকাশ ও ২০২৪ সালে “ইতিহাস ও ঐতিহ্য কাহালু” শিরোনামে বই প্রকাশ করেছেন, অফিশিয়াল কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করে থাকেন তিনি।
একাধিক জনপ্রতিনিধিরা জানান, কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজ কাহালুতে যোগদানের পর থেকেই জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে দিনে-রাতে কাহালু উপজেলাবাসীর জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এমন নিষ্ঠাবান-কর্মঠ ও মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন ইউএনও অতীতে খুব কম পেয়েছে। তাঁর কর্মকান্ডে মনে হয়েছিল তিনি কেবল ইউএনও নন, কাহালু উপজেলার একজন সচেতন অভিভাবকও।
কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজ জানান, কাহালু উপজেলায় যোগদানের পর থেকে গণ-প্রজাতন্ত্রের একজন সেবক হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। সারাদেশের ইউএনও সহ সরকারি কর্মকর্তারা যেভাবে কাজ করছে আমিও সেভাবে কাজ করছি। তবে অনেক কাজে আমাকে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা ও সাংবাদিক সহ অনেকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। ইতিমধ্যে কাহালু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মেরিনা আফরোজ এর বদলির আদেশ এসেছে। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করবেন এবং কাহালু উপজেলা নির্বাহি অফিসার হিসেবে যোগদান করবেন কাওছার হাবীব।