শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
14 Dec 2024 04:32 am
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:-পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ব্যানবেইস পাঠানোর ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।উপজেলার ছাতুয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরমান হোসেন মুকুল ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহষ্পতিবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রেরনকৃত ফাইলটি ফেরত আনার জন্য ইউএনও নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ছাতুয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরমান হোসেন মুকুল তথ্য গোপন করে ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে তার সহ ৩ শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য ব্যানবেইস পাঠায়।ঘটনাটি ফাঁস হলে উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে মামলার নথিপত্র এবং বরখাস্তের ফাইল থাকলেও তিনি তা আমলে নেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়ার পরই গতকাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফাইলটি ফেরত আনার জন্য ইউএনও নির্দেশ দিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরমান হোসেন মুকুল একাই অনেকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার স্ত্রী সহ ৯ জনকে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ব্যানবেইসে ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করে। ফলে কমিটির সিদ্ধান্তে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে ৩ টি মামলা ককরা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ভুয়া ও প্রতারক এবং জাল-জালিয়াতির হোতা আরমান হোসেন মুকুলের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউএনও স্যারের কাছে অনুরোধ করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মন্ডল বলেন, আমি ইউএনও স্যারের স্বাক্ষর দেখে ফাইলটি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেছি।এখন ইউএনও স্যারের নির্দেশে ফাইলটি ফেরত আনার পদক্ষেপ নিয়েছি।ইউএনও খাদিজা বেগম বলেন,উল্লেখিত বিদ্যালয়ের মামলা থাকায় ব্যানবেইস প্রেরনের কোন কাগজে স্বাক্ষর করিনি।আমি অভিযোগ পেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দফতর থেকে ফাইল ফেরতের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।আমার স্বাক্ষর নিয়ে প্রতারনা করায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, সাময়িক বরখাস্তকৃত মুকুল বিদ্যালয়টির পুর্নাঙ্গ প্রধান শিক্ষক হতে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার ২ টি নিয়োগ ও ৩ টি যোগদানের তথ্য ব্যানবেইস ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।এছাড়াও তিনি স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার স্ত্রী রোকসানা বেগম সহ ৯ জনকে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ব্যানবেইস ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করেন।পাশাপাশি গত বছর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মুকুল তারসহ ৩ জন শিক্ষকের বেতনভাতার জন্য এমপিওভুক্তির কাগজপত্র পাঠালে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
পাশাপাশি ৩ টি মামলাও করে।তারপরও সাময়িক বরখাস্তকৃত মুকুল তথ্য গোপন করে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে এডহক কমিটি গঠনের জন্য পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে ভুয়া অভিভাবক সদস্য মনোনয়ন নেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদস্তে সত্যতা পাওয়ায় রংপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডকে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউএনও নির্দেশনা দিয়েছেন।