বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
22 Nov 2024 05:36 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ-গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া,ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।ভাঙচুর করা হয়েছে আটটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনার সময় পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ৭টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের গেটে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনার সূত্রপাত হয়।পরে উভয় দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলো চৌমাথা মোড়েও হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়।
পরে দেশীয় অস্ত্র হাতে চৌমাথা মোড়ের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে মহড়া দেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।ঘটনার সময় পলাশবাড়ী থানা পুলিশ নীরব থাকলেও খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।এ সময় নেতাকর্মীরা সড়ক থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামায়াতপন্থি রাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে পরিষদের সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের বিরোধ দেখা দেয়।বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানি হয়।শুনানিতে পরিষদের মেম্বারদের (সদস্য) মধ্যে কয়েকজন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে কথা বলেন।
এ নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।পরে পরিষদের গেটে এলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা শুরু হয়।এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে দোকানসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল।ঘটনার সময় উভয় দলের নেতাকর্মী, পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
এদিকে, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মুহূর্তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের ৬ টি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগে পুড়িয়ে দেন।এ সময় পথচারীসহ অনেকেই ছোটাছুটি করতে থাকেন।এ সময় দ্রুত দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেন ব্যবসায়ীরা।তবে ঘটনার সময় পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা জানিয়ে পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টু জানান, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কেউ আহত হয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি।তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।মহদীপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে দুই দলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদারের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।এ ঘটনায় রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত কোনও দলের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস ছামাদ বলেন হঠাৎ কথা কাটির রেশ ধরে জামায়াতরা পরিকল্পিক ভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়,হামলা ১০ জন আহত হয়। জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবুকে বলেন ৫ নং মহদীপুর ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির সমার্থকরা চেয়ারম্যানকে আক্রমন করেন।এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম লিয়াকত জানান, ঘটনার সময় তাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।এ সময় একটি অফিস ও নেতাকর্মীদের ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় দুটি মোটরসাইকেলে। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্রহাতে ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।