বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪
24 Dec 2024 05:27 am
পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি:- জ্যামিতির কঠিন বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে সহজে বোধগম্য করতে ইট, সিমেন্ট, বালি দিয়ে জ্যামিতির বিভিন্ন আকৃতি নির্মান করা হয়েছে।উপজেলার জলাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর আলম মিয়া বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের সামনেই জ্যামিতিক মঞ্চটি নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীরা অনায়াসে রপ্ত করছে।সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের জলাইডাঙ্গা বেসরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর ২০১৩ সালে সরকারিকরণ হয়।
বিদ্যালয়র প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক নুর আলম মিয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে গণিত ও জ্যামিতির ভীতি দুর করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। প্রায় ৪ বছর আগে বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবনের সামনে জ্যামিতির কয়েকটি আকৃতি নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও সিড়ি দিয়ে দ্বিতল ভবনে উঠার সময় শিক্ষার্থীরা যাতে ধাপে ধাপে নামতা শিখতে পারে, সেজন্য বিদ্যালয়টির সিড়ির উচ্চতাগুলোতে ইংরেজির গানিতিক সংখ্যা এবং নামতা লেখা রয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি শ্রেনি কক্ষে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়গুলো চিত্রিত করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেন পুরো বিদ্যালয়টিই শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক হয়ে আছে।
বিদ্যালয় ভবনের সামনে পতাকা ষ্ট্যান্ড ও মঞ্চের পাশেই জ্যামিতিক মঞ্চে বৃত্ত, আয়তক্ষেত্র, রম্বস, বর্গক্ষেত্র, ট্রাপিজিয়াম, বিষমবাহু ত্রিভুজ, সমবাহু ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, সামন্তরিক এই ১০টি বিষয় কংক্রিটে নির্মাণ করে নেন। তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জ্যামিতির বিভিন্ন সংজ্ঞা মনে রাখতে হিমশিম খেলেও বিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত জ্যামিতিক বিষয়গুলো সহজে আয়ত্ব করতে পারছে। ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী নুরাইয়া আক্তার জানায়, জ্যামিতি পড়া কঠিন লাগতো। অংকের স্যার মন্জুর হোসেন বৃত্ত, বর্গক্ষেত্র, সামন্তরিক সহ অন্যান্য বিষয়গুলো মাঠে দেখিয়ে পড়ানোর কারণে আর ভূল হয় না।
একই কথা বলেন, ৩য় শ্রেণির সৌরভ মিয়া, ৫ম শ্রেণির শোভা আক্তার জুই।বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নুর আলম মিয়া বলেন, ভূমি বা জমি পরিমাপে ব্যবহৃত জ্যামিতির বিষয়গুলো সহজভাবে বোঝার জন্য সরকারি “¯িøপ” বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জ্যামিতিক মঞ্চটি নির্মাণ সহ বিদ্যালয়ের সংস্কার করেছি। শিক্ষার্থীরা এখন অনায়াসে জ্যামিতি বুঝতে সক্ষম হচ্ছে।সেইসাথে এটি স্কুলকেও দৃষ্টিনন্দন করেছে। বাইরে থেকে অনেকেই মঞ্চটি দেখতে আসছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন শাহ্ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিখন-শেখানো কাজে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
জলাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জ্যামিতিক ধারণা স্থায়ীভাবে অর্জনের জন্য এই জ্যামিতিক আকৃতিগুলো বিদ্যালয়ে তৈরি করে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়ায় শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে জ্যামিতিক ভীতি দুর করা এবং তা সহজবোধ্য করতেই জ্যামিতিক মঞ্চটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।এটি শিশু শিক্ষার্থীদের মনন মেধা বৃদ্ধিতে আজীবন গেঁথে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ তথ্যগত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষা উপকরণ দিয়ে হাতেকলমে শেখানো হলে শিক্ষার্থীরা তাদের স্মৃতির ভান্ডারে সারাজীবন জ্ঞান ধরে রাখতে পারবে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা,পীরগঞ্জ,রংপুর