শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
21 Nov 2024 04:03 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- সবাই চায় তাদের প্রত্যেকটি সম্পর্ক ভালো থাকুক। সেটি হোক বন্ধুত্ব, প্রেম, পারিবারিক বা যেকোনো। ঝগড়া, গালি দেওয়া, মিথ্যা বলা, ঠকানো- এই ধরনের বিষয়গুলো সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট। এসব ছাড়াও কিছু বিষয় থাকে যেগুলো সম্পর্কে বাজে প্রভাব ফেলে।
সেসব নিয়েই এই আয়োজন।
আজকের প্রতিবেদনে অন্য কোনো সম্পর্ক নয়, স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কে যেসব বিষয় বাজে প্রভাব ফেলে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলুন তাহলে জেনে নিই কী কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বাজে প্রভাব পড়ে।
সঙ্গীর আগ্রহের বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়া
একজনের মাংস পছন্দ বলে অন্যকেও মাংস খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই, বা একই রকম গান দুজনের ভালো নাও লাগতে পারে।
আর সেসব নিয়ে জোরাজুরির কিছু নেই। বরং এগুলো সম্পর্কে সুস্থ প্রভাব ফেলে। তবে সঙ্গীর আগ্রহকে অবহেলা করলে সম্পর্কে বাজে প্রভাব পড়বেই।এ বিষয়ে মার্কিন পারিবারিক পরামর্শক অ্যাবিগেইল মেইকপিস হাফপোস্ট ডটকম’এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
সেখানে তিনি বলেন, কোনো পছন্দের গান সঙ্গী শোনাতে চাইলো, কিন্তু আপনি তখন সেটা শুনতে চাইলেন না বা কাজ আছে পরে শুনবেন বলে এড়িয়ে গেলেন। এই ধরনের ব্যবহার সঙ্গীর মনে বাজে প্রভাব ফেলে। এ ক্ষেত্রে গানটা আপনাকে উপভোগ করতে হবে না। বরং কিছু সময়ের জন্য শুনে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেই বরং সঙ্গীকে সঙ্গ দেওয়া হবে।
ছোটখাট বিষয়ে ধন্যবাদ না দেওয়া
বিশেষ দিনে হয়তো উপহার দিচ্ছেন, তবে নিত্য দিনের অনেক কাজ সঙ্গী করে যাচ্ছে সেগুলোর ব্যাপারে কিছু বলা হচ্ছে না।
সঙ্গীর কণ্ঠে প্রশংসা শুনতে সবারই ভালো লাগে বলেও মন্তব্য করেন অ্যাবিগেইল।
একই প্রতিবেদনে নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া’র মনোবিজ্ঞানি নিকোল সনডার্স বলেন, ভালো সম্পর্ক বড় কোনো বিষয়ের ওপর নয় বরং নিত্য দিনের ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। তাই রান্না করে খাওয়ানো কিংবা কোনো জিনিস হাতের কাছে এনে দেওয়ার মতো ঘটনায় সঙ্গীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না।
সমালোচনা করা
সম্পর্কে সমালোচনা হল অভিযোগ করা। ধরা যাক আপনি বলে উঠলেন- খাবার সময়ে আসতে সবসময় দেরি কর। সময় মতো আসতে তোমার কী হয়? এরকম করলে সঙ্গী আক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করবে। তখন আর সুস্থ সম্পর্ক বজায় থাকবে না। তাই সমালোচনার পরিবর্তে ইতিবাচক উপায়ে জিজ্ঞেস করা হবে স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষণ।
মেইকপিস বলেন, সঙ্গীর সমালোচনা না করে নির্দিষ্ট বিষয়ে জানতে চাওয়া বা অনুরোধ করা হলো ভালো সম্পর্কের ভিত্তি। আর সেটা বিরক্ত হয়ে নয় বরং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে করতে হবে।
সম্পর্কের বাইরে অন্য কোনো জীবন
যে কোনো সম্পর্কের শুরুতে দুজন দুজনকে ছাড়া থাকতে না পারাকে বলা হচ্ছে হানিমুন পিরিয়ড। তবে কিছুদিন পরও যদি বন্ধু, পরিবার সব বাদ দিয়ে শুধু সঙ্গীর দিকেই নজর থাকে তবে বিষয়টা বাজে হয়ে যায়। যখন দম্পতিরা নিজের অতি মাত্রায় কাছাকাছি রাখতে চায় তখন সম্পর্কে এক ধরনের চাপ তৈরি হয় বলে মনে করেন সনডার্স।
তার কথায়, যে কোনো মূলে সম্পর্ক চালিয়ে গেলে সঙ্গী যেমন দম ফেলতে পারে না তেমনি নিজের ওপরেও চাপ পড়তে থাকে। কিছু সময় নিজের মতো থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হতে পারে যার যার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে বা নিজের মতো সময় কাটানো।
অনুমতি ছাড়া সঙ্গীর ফোন দেখা
চুপিচুপি সঙ্গীর মোবাইল নিয়ে ইন্সটাগ্রাম বা ফেইসবুকে ঢুকার মানে হলো তার ব্যক্তিগত গণ্ডি লঙ্ঘন করা। সেই সঙ্গে প্রমাণ হয় সঙ্গীর ওপর অনাস্থা। মেইকপিস বলেন, ফোন পরখ করার মাধ্যমে সঙ্গীর বিশ্বস্ততা যাচাই করতে যাওয়ার মানে হলো সম্পর্কে আস্থার অভাব রয়েছে। এখানে সন্দেহ বা অসততার কোনো বিষয় নয়, প্রত্যেক সম্পর্কের মধ্যেই ব্যক্তিগত বিষয় থাকে। যেমন- সঙ্গীর বন্ধুদের সঙ্গে ‘চ্যাট গ্রুপ’য়ের কথাবর্তা পড়ার বা জানতে চাওয়ার কোনো মানে নেই। যদি একই বন্ধুমহলের মধ্যে থাকে সব কিছু তবে অন্য কথা- ব্যাখ্যা করেন মেইকপিস।
প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা
যে কোনো সম্পর্কে কথা দিয়ে কথা রাখা হলো বিশ্বাসের সরল ভিত্তি। আর রোমান্টিক সম্পর্কে এটা বেশি জরুরি। তবে বেশিরভাগ সময় অভ্যাস মতো কথা দেওয়া আর সেটা রাখতে না পারলে সম্পর্কেল ভিত্তিতে চিড় ধরতে বাধ্য। আর এখানে যে বড় বড় বিষয় আসবে তা নয়, ছোটখাটো বিষয়গুলোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। যেমন- রান্না ঘরের ময়লা ফেলা, বাসা পরিষ্কার, বিছানাটা একটু গুছিয়ে রাখা- এই ধরনের বিষয়গুলো নিজের করার সম্মতি দিয়েও না করার মানে হলো প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা। এগুলো সম্পর্কে অসন্তোষ তৈরি করে বলে মন্তব্য করেন জ্যাক ব্রিটেল।
মেইকপিস বলেন, তাই কোনো কাজ করতে না পরলে মিথ্যে আশ্বাস না দিয়ে, কেনো করতে পারবেন না সে বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়াই হবে যুক্তি যুক্ত ব্যবহার।
কালের কণ্ঠের