রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪
24 Nov 2024 08:09 am
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সৈন্য পরিবারসহ হত্যা করে। তারপর তাঁকে নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাস, নাটক-সিনেমা তৈরি হতে থাকে।ফলে তাঁর শাসনকালের ব্যর্থতা ভুলে মানুষ তাদের হৃদয়ে তাঁকে শ্রদ্ধার আসনে বসায়।কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি শুরু করে। বিভিন্ন সেতু, রাস্তা-ঘাট তাঁর নামে উদ্বোধন শুরু করে।
শত শত প্রতিকৃতি স্থাপন করে ও ম্যুরাল( দেয়াল চিত্র) অংকন শুরু করে। তারপর ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে সেগুলো ভেঙে ফেলে এবং মুছে দেয়। এখন প্রশ্ন হলো- প্রতিকৃতি( মুর্তি) বানিয়ে অথবা ছবি টাঙিয়ে কাউকে কি স্মরণীয় করে রাখা যায়? মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা ফজলুল হক সহ আমাদের বহু প্রখ্যাত রাজনীতিকের তো এভাবে প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়নি।
তাঁরা কি মানুষের হৃদয় থেকে মুছে গেছে? কিন্তু আওয়ামীলীগ অতীত থেকে কোনো শিক্ষা না নিয়ে আবারও একই কর্ম শুরু করে। ২০০৮ এ ক্ষমতায় এসে দ্বিগুণ উৎসাহে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, অফিস প্রাঙ্গনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রতিকৃতি স্থাপন শুরু করে। এমনতো নয়, আওয়ামীলীগ সরকার ও তাদের নেতাকর্মীরা দুর্নীতি মুক্ত ও দেশপ্রেমিক। বরং বাস্তবে উল্টা চিত্র দেখা যায়।তাঁর ছবিকে ব্যবহার করে দখল বাণিজ্য ও বহু অপকর্ম শুরু হয়। তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে দল থেকে পৃথক করতে এবং তাঁর ভ্যালুকে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়। ফলে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে ছবিটার প্রতিও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন শুরু করে। এলাকার কুখ্যাত ব্যক্তিও নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে পরিচয় দেয়। যখন তখন তাঁর ভাষণ বাজাতে দেখা যায়।
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর কিছু উদ্দেশ্য প্রণোদিত মানুষের উৎসাহে তাঁর হাজার হাজার প্রতিকৃতি ধ্বংস করে দেয়া হয়। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংবলিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটিও পুড়িয়ে দেয়া হয়। কাজেই বঙ্গবন্ধুকে এভাবে বার বার হত্যা করার জন্য অন্য কাউকে দায়ী করার আগে নিজেদের চেহেরা আয়নায় দেখুন। লোকটিকে এভাবে বার বার হত্যা করা থেকে নিজেদের সংবরন করুন।
লেখক: গবেষক।