রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
22 Nov 2024 03:38 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কোটা আন্দোলনকারী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, সরকার আদালতকে উপেক্ষা করে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। কোটা পুনর্বহাল বা বাতিল সিদ্ধান্ত আদালতের। সরকার ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেছিল, কোটা পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন আদালত, তাই আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যখন ফখরুল-রিজভী-গয়েশ্বররা সোচ্চার হয় তখন বুঝতে হবে ডাল মে কুচ কালা হে। সরকার শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সহনাভূতিশীল। কিন্তু জনগণের ভোগান্তি হয় বা জান-মালের ক্ষতি হয় সরকার তা করতে দিতে পারে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে গিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
আজ শনিবার বিকেলে শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা ও মরণোত্তর সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দল নয়, একটি পরিবার। শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, দুরদর্শিতা ও বুদ্ধিমত্তায় আওয়ামী লীগ তার নেতৃত্বে আজ চারবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। তাকে বহুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, অনেক নেতা বেইমানী করেছে, বেসুরে কথা বলেছে কিন্তু কর্মীরা তাকে ছেড়ে যাননি, সবসময় পাশে থেকেছেন। কর্মীরাই শেখ হাসিনাকে শুধু বাংলার নেতা নয় বিশ্ব নেতারা পরিণত করেছেন। তার দুরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব গুণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান আজ বাংলাদেশকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এটাই বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বের সার্থকতা। আজ আমরা পাকিস্তান-ভারতের মতো দেশের থেকে অনেক সূচকে এগিয়ে। এই অর্জন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগের। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস মানে আওয়ামী লীগের ইতিহাস, আর আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানে বাংলাদেশের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিজয় লাভ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা। আজ মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার কারণে তাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা পিছিয়ে যাননি, বিচলিতও হননি, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু পরবর্তী আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনীতি একটি ব্রত। এটি অর্থ-বিত্ত উপার্জনের মাধ্যম নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ব্রত নিয়ে রাজনীতি করেছেন। তিনি বলেন, সুবিধাভোগীরা আজ দুলে ঢুকে গেছে। এদের হাত থেকে দলকে রক্ষা করতে হবে। সংগঠনের ওপর এদের কালোথাবা পড়ার আগেই এদের ছেঁটে ফেলতে হবে। এজন্য দলের প্রকৃত নেতাকর্মীদের তিনি সজাগ থাকার আহবান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এমপি বলেন, আইয়ুব খান ও জিয়াউর রহমানরা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। খালেদা জিয়া-তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, তারা আজ কোথায়? বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবিক নেত্রী শেখ হাসিনার কারণে সাজাপ্রাপ্ত হয়েও খালেদা জিয়া আজ বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারেক রহমান লন্ডনে বসে বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করে, বিলাশবহুল জীবন যাপন করে, এই অর্থের উৎস কী। এরা রাজনৈতিক ভাবে ব্যর্থ হয়ে শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর দিয়ে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। ২৮ অক্টোবরের মতো এদের ঘরে তুলে দিতে হবে, এজন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কাউকে ষড়যন্ত্র করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এমপি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান ও বগুড়া-৭ আসনের এমপি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু। অনুষ্ঠানের শুরুতে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা ও মরণোত্তর সন্মাননা প্রদান এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও সরকারি শিশু পরিবারের সদস্যরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।