সোমবার, ০৩ জুন, ২০২৪
22 Nov 2024 03:33 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- সম্প্রতি সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে- এক সময় একজোট হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা রাষ্ট্রগুলো কেন এখন ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নির্বিকার? এমনকি নিজেদের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করা ইসরায়েল নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে আছে সীমান্তবর্তী মিশর ও জর্ডানও। এর কারণ কোথায়? আর ইসরায়েলকে রক্ষা করে মিশরের স্বার্থ কী?
এমনই কৌতূলহউদ্দীপক প্রশ্নের জবাব পাওয়া গেল মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর গাজা থেকে শুরু করে একে একে ফিলিস্তিনি আবাসভূমির ওপর তাণ্ডবলীলা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফাহতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মিশর সীমান্তবর্তী এ শহর দখলকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় দুই মিসরীয় সেনাসদস্য।
এ ঘটনার পরই মিসরজুড়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে নাগরিকরা। তবে দেশটির সেনাবাহিনী ঘটনার তদন্ত করা ছাড়া নিহত ও আহত সেনাদের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। এমনকি এক সেনার দাফনে কোনো সামরিক শ্রদ্ধা পর্যন্ত জানায়নি সেনাবাহিনী। অপর সেনার মৃত্যু সরাসরি অস্বীকার করে বসে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সেনাসদর।
মিসরীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তেলআবিবের সঙ্গে কায়রোর সম্পর্ক ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। মূলত ১৯৭৮ সালে স্বাক্ষরিত ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির আওতায় দুই দেশের সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বোঝাপড়া পরিচালিত হয়।
প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের সময় স্বাক্ষরিত এ চুক্তি প্রেসিডেন্ট সিসির সময়ে আরো সুদৃঢ় হয়েছে। আর জনমতকে উপেক্ষা করে মিসরীয় প্রশাসন এ চুক্তির সব সুবিধা ভোগ করছে।
সিসি প্রশাসন জনগণের মধ্যে এ ধারণা প্রচার করার চেষ্টা করছে যে, আমেরিকার সঙ্গে তাদের সখ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল। দেশটি প্রতি বছর আমেরিকা থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পেয়ে থাকে।
এছাড়া মার্কিন মিত্র ও অন্যান্য সংস্থা থেকে আরো বিপুল পরিমাণ সহায়তা পেয়ে থাকে কায়রো প্রশাসন। যা বর্তমান স্বৈরশাসনকে অর্থনৈতিকভাবে পতনের হাত থেকে রক্ষা করছে।
এ চুক্তির ফলে ইসরায়েল আরব বিশ্বের বৃহত্তম একটি দেশকে সংঘাত থেকে পুরোপুরি দূরে রাখতে পেরেছে।একই সঙ্গে ইসরায়েলি প্রশাসন বুঝতে পেরেছে যে মিসরীয় সরকার পুরোপুরি তেলআবিবের ইচ্ছার প্রতি নির্ভরশীল। সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক ফিলাডেলফি করিডোর দখল ও দুই মিসরীয় সেনা হত্যার পরও সিসি প্রশাসনের নির্লিপ্ততা তারই জ্বলন্ত প্রমাণ বহন করে।
সিসি প্রশাসন পশ্চিমা শক্তিগুলোকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, তার শাসনের বিপরীতে গণতান্ত্রিক সরকার ইসরায়েলের বিপক্ষে সংঘাতে অংশ নেবে। যা তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি জনপ্রিয় করে তুললেও ইসরায়েলের জন্য হুমকি তৈরি করবে।
এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমা সহযোগিতা নিয়ে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখছেন চরম দুর্নীতিবাজ এ শাসক।