শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
24 Nov 2024 01:46 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলের বসতবাড়ির আশপাশ ও ঝোঁপ-জঙ্গলে অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে উঠত দেশি আনারস। তখন এ ফলটির কদর ছিল বেশি। কিন্তু সেই আনারস এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ যেনো শুধুই স্মৃতি। আগের মতো নজরে পড়ে না এসব আনারস।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সরেজমিনে গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার একটি গাছ-বাশঁঝাড়ে হঠাৎ দেখা মেলে সেই চিরচেনা দেশি আনারস। এখানে আজাহার আলী পাইকার নামের এক ব্যক্তির ভিটেমাটিতে শতাধিক আনারসের গাছ পথচারিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কাঁটাযুক্ত সবুজ পাতার ফাঁকে রাঙিয়ে উঠা বেশ কিছু ফুটন্ত আনারস দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন অনেকে।আগে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে সচেতনতার অভাবে আবাদযোগ্য জমি পতিত পড়ে থাকতো। এসব পতিত জমিতে গজিয়ে উঠত ঝোপ-জঙ্গল। সেখানে কোনোভাবে একটি আনারস গাছ জন্মালে তা থেকেই শত শত আনারস গাছ হতো বলে জানালেন আছির উদ্দিন নামের এক বৃদ্ধ।স্থানীয় ভেষজ চিকিৎসক (অবসরপ্রাপ্ত) মফিজল হক সরকার বলেন, আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। যা মানবদেহের হাড়ের সুস্থতায় প্রয়োজনীয়। এছাড়া দেশি আনারসের ছাল গ্যাস্টিকের চিকিৎসায় প্রয়োজন হয়। হাড়ের সমস্যাজনিত যেকোনো রোগ প্রতিরোধ করাও সম্ভব এ ফলটি দিয়ে।
এখন দেশের আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটেছে। ফসল উৎপাদনে এসেছে নানান ধরনের প্রযুক্তি। কৃষকদের মধ্যে বেড়েছে সচেতনতা। ফলে এখনকার মানুষ খুব বেশি জমি পতিত রাখে না। তারা পরিকল্পনা করে লাভজনক ফসল উৎপাদন করেন। তেমন চাহিদা না থাকায় দেশি আনারসের প্রতি কারও আগ্রহ নেই। ফলে উঠে যাচ্ছে ঝোপ-ঝাড়। বিলুপ্তির পথে দেশি আনারস, এমনটি জানালেন কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন।
বাপ-দাদার আমল থেকেই বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলে প্রায় ৩০০ আনারস গাছ রয়েছে। যা থেকে নিজের চাহিদা মিটিয়ে বছরে ১৫-২০ হাজার টাকার আনারস বিক্রি করা হয়। আগামী প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে এই গাছগুলো থাকবে বলে জানিয়েছেন কৃষক আজাহার আলী পাইকার।গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, দেশি আনারসের রস কম এবং একটু টক। উন্নত জাতের আনারস অনেক রসালো ও সুস্বাদু। তাই এখন বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উন্নত জাতের আনারস চাষ করা হচ্ছে। এর ফলে দেশি আনারসের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। তবে দেশি আনারসের উপকারিতা বেশি।