শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪
31 Jan 2025 11:43 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :-বয়স সবে দেড় বছর। ঠিক মতো কথাও ফোটেনি মুখে। অধিকাংশ সময় বিছানা আর মায়ের কোলে বসেই কেটেই যায় যার দিন, সেই শিশুই কি না এখন ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের অধিকারী! অবাক হলেও সত্যি।
কলকাতার বেহালার গৌরব দাস । অনাহাসেই চট জলদি দেখিয়ে দিতে পারে কোনটা কোন প্রাণী ও কোনটা কোন শাকসবজি ও কোনটা কোন ফল আরো অনেক কিছু তাকে জিজ্ঞেস করলেই সে চট জলদি দেখিয়ে দিতে পারে দিতে তার শরীরে কোন অঙ্গ কোথায় আছে সেটিও দেখিয়ে দিতে পারে। এতটুকু বয়সে একসঙ্গে এতকিছু করার জন্য ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের খেতাব জিতেছে এই একরত্তি শিশু। ছোট্ট গৌরব দাসের সর্বভারতীয় এই খেতাব জেতার খবর পেয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছে বেহালা র মহকুমা প্রশাসন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা কলকাতার বেহালার নিবাসী ছোট্টপরিবারে বেড়ে ওঠা গৌরব। বাবা গৌতম দাস ব্যাঙ্গালোরে একটি হোটেলে সেফ হিসাবে কর্মরত। ছোট থেকে বাড়িতে মায়ের কাছে বাংলা ও ইংরেজি কবিতা ও গল্পের শুনে শুনে তালিম নেওয়া। বাকি বাংলা ও ইংরেজি মাসের নাম শেখা, জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শোনানোর পাশাপাশি মনীষী ও পশু-পাখির বাংলা ও ইংরেজিতে নাম শেখান বা চিনতে শেখান মা প্রিয়াঙ্কা দাস মারিক।
সর্বক্ষণ ছেলের সামনে এসব কিছু আওড়াতে থাকতেন প্রিয়াঙ্কা দেবী। মায়ের মুখে শুনতে শুনতে ছোট্ট গৌরব রপ্ত করে ফেলে সবকিছু। ছেলের সবধরনের পারফরম্যান্স ভিডিয়ো করে জমিয়ে রাখতে শুরু করেন গৌরবের মা। একাধিক ভার্চুয়াল প্রতিযোগিতাতেই সেই ভিডিয়ো পাঠাতে শুরু হয়। গত জানুয়ারি মাসে অনলাইনের মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস্’-এ নাম তোলার জন্য আবেদন জানানো হয়। কিছুদিনের মধ্যে সংস্থার তরফে গৌরবের পারফরমেন্সের কিছু ভিডিয়ো চাওয়া হয়।
সেই মত তার সব ভিডিয়ো পাঠিয়েও দেওয়া হয়। ছোট্ট শিশুর মনে রাখার স্মৃতিশক্তি দেখে মনভরে বিচারকদের। রাতারাতি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস এ জায়গা করে নেয় কলকাতার বেহালার একরত্তি। ফোন করে গৌরবের মাকে সেই খবর জানানো হয়। প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ১২ই মার্চ ২০২৪ সকালে মেডেল এবং শংসাপত্র বাড়িতে পাঠানো হলে খুশিতে ফেটে পড়েন পরিবারের সবাই। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফোনে একের পর এক শুভেচ্ছা আসতে শুরু করে। ছেলের এই সাফল্যকে আগামী দিনের পথচলার প্রথমধাপ হিসেবেই দেখছেন মা প্রিয়াঙ্কা দাস মারিক।
গৌরবের মা প্রিয়াঙ্কা দাস মারিক বলেন, ‘এর পিছনে ওরই ক্রেডিট। তবে ওকে সবকিছু শেখাতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি আমি। সব থেকে চ্যালেঞ্জিং ছিল ওকে এক জায়গায় বসিয়ে স্টপ ওয়াচ চালিয়ে নন এডিং ভিডিয়ো পাঠাতে হয়েছে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের টিমকে। এমনও হয়েছে একটা ভিডিয়ো করতে এক সপ্তাহ সময় লেগে গিয়েছে। তবুও হাল ছাড়িনি আমি। ছেলের সাফল্যে খুব খুশি হয়েছি।’