বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
21 Nov 2024 06:49 pm
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : ভূমি আইন উপেক্ষা করে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আবাদী জমিতে এস্কেভেটর ভেকু মেশিন দিয়ে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। আবাদী জমিতে মাটি কেটে পুকুর খননের কারনে গিলে খাওয়া হচ্ছে শতশত বিঘা জমির পরিমান। ফলে এক দিকে যেমন কৃষি জমি কমে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে সেইসব খনন করা জমির চার পাশের ফসলি জমির উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতির সম্ভবনা দেখা দিচ্ছে এবং মাটি বহন করা ট্রাক্টরে পাকা রাস্তার ক্ষতিসাধন হচ্ছে।
এক শ্রেণির অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা গ্রামের সহজ সরল মানুষকে পুকুর খননে উৎসাহিত কর এই পুকুর খননের কাজ দেদারছে করছে। পুকুর খননের কারনে এ উপজেলায় দিন দিন আবাদী কৃষি জমি আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে। ফলে আগামীতে খাদ্য ঘাটতির আশংকা রয়েছে।
বগুড়ার শস্য ভান্ডার বলে খ্যাত আদমদীঘি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও সান্তাহার একটি পৌরসভা মিলে ১২ হাজার ৪৫০ হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। এসব ফসলি প্রায় জমিতে রোপা আমন, ইরিবোরো রবিশস্যসহ তিনটি করে আবাদ করেন কৃষকরা। আমন মৌসুমে ৩৬ হাজার ৫৪২ মেট্রিক টন ও ইরিবোরো মৌসুমে ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। এতে অত্র উপজেলার খাদ্য চাহিদা পুরন করে অতিরিক্ত খাদ্য দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অথচ কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব আবাদী জমিতে পুকুর খনন করে আবাদী জমি কমে খাদ্য উৎপাদন ব্যহত করছেন। সরকারী ভাবে আবাদি জমিতে পুকুর খনন কিংবা জমি কেটে মাটি বা বালি উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও আদমদীঘি সদর, কুন্দগ্রাম, নসরতপুর, ছাতিয়ানগ্রাম, চাঁপাপুর, কা নপুর ঝাকড়, সান্তাহার তারাপুরসহ বিভিন্ন মাঠে সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে আবাদী জমিতে এস্কেভেটর বা ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে গভীর গর্ত করে পুকুর তৈরী করছেন। আবার কেউ পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে গভীর করে মাটি কেটে আবাদী জমি ভরাট ও মাটি বিক্রি করছেন।
আবাদী জমির মালিক ও এস্কেভেটর মেশিন ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবাধে এসব আবাদী জমির মাটি কেটে সরকারী পাকা সড়ক ব্যবহার করে ট্রাক্টর যোগে অন্যত্র বিক্রি করছে। এ ভাবে আবাদী জমির মাটি কেটে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে আদমদীঘি উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নে মাঠে মাঠে। আগামীতে আবাদী জমি কমে খাদ্য ঘাটতির আশংকা করছেন অভিজ্ঞ মহল। এছাড়া ট্রাক্টরের মাধ্যমে মাটি বহনের কারনে গ্রামীন বিভিন্ন পাকা সড়ক নষ্ট হতে চলেছে। আবাদী জমিতে মাটি ভরাটকারি জিয়াউর রহমার জিয়া সত্যতা স্বাীকার করে বলেন, আইনে আবাদী জমির মাটি কেটে পুকুর খনন বা মাটি ভরাট করা যাবেনা তা আমার জানা নেই।
তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুমতিতে মাটি কাটার কাজ করা হচ্ছে। গত বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃংখলা কমিটির সভায় আদমদীঘির সহকারি কশিশনার (ভুমি) ফিরোজ হোসেন বলেন, পুরাতন পুকুর পুন:খনন কাজ অনুমতি গ্রহন করে শুধু পুকুরপাড়ে মাটি ফেলা যাবে।
রাস্তায় মাটি বহন করা যাবেনা। আবাদী জমি থেকে মাটি কাটা বা ধরণ পরিবর্তন বেআইনী। কেউ করলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহি অফিসার রুমানা আফরোজ বলেন, যদি কেউ অবৈধ ভাবে কৃষি জমিতে পুকুর খনন বা মাটি ভরাট করেন কিংবা মাটি কেটে সরকরী সড়ক দিয়ে বহন করেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আবু মুত্তালিব মতি,আদমদীঘি বগুড়া প্রতিনিধি