রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
14 Nov 2024 12:15 pm
সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম:-কুড়িগ্রাম জেলার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (জেলা স্কুল) ৭ ছাত্র জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির ঘটনা তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) শোকজ করেছে।বিধি বিধি বহির্ভূতভাবে ছাত্র ভর্তির জালিয়াতির খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে তদন্তে সত্যতা সাপেক্ষে তাকে এ কারন দর্শানো (শোকজ) নোটিশ প্রদান করা হয়। শোকজে বলা হয়েছে পত্র প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে মাউশির মহাপরিচালক বরাবর এর জবাব প্রদান করতে হবে।কিন্তু তিনি এখনও (১৩/১২/২৩ এর স্বাক্ষরিত চিঠি ঐদিনই পেয়েছেন) এর জবাব প্রদান করেননি বলে জানা গেছে। শোকজ পত্র পাওয়ার ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো: শামছুল আলম সাংবাদিক কে নিশ্চিত করেন।
গত কয়েকদিন আগে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ভর্তির জালিয়াতির খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালকের নির্দেশে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার। তদন্ত রিপোর্ট মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) বরাবর প্রেরণ করা হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ শোকজ আদেশ প্রদান করা হয়।মাউশির সরকারি মাধ্যমিক শাখার সহকারী পরিচালক-১ দুর্গা রানী শিকদার স্বাক্ষরিত ১৩ ডিসেম্বর তারিখের শোকজ আদেশে জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে প্রাপ্ত তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বিধি বহির্ভূতভাবে ৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় কেন আপনার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে তা পত্র প্রাপ্তির ৩দিনের মধ্যে মহাপরিচালক,মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর বাংলাদেশ, ঢাকার দফতরে দাখিল করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল বলে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুল আলমকে প্রধান শিক্ষকের শোকজের আদেশ প্রাপ্তির বিষয়ে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এর আগে প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক জালিয়াতির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬জন ও ৯ম শ্রেণিতে ১জনসহ ৭ শিক্ষার্থীর ভর্তির বিষয়টি অস্বীকার করেন।পরে তিনি তদন্তের সময় জেলা শিক্ষা অফিসারসহ সাংবাদিকদের কাছে বিধিবহিভূত ৭ ছাত্র ভর্তির কথা স্বীকার করেন। শনিবার শোকজ লেটার প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জানান,আমার তো কয়েক দিনের মধ্যে চাকুরি শেষ (২৪/১২/২৩) হচ্ছে। আমি রবিবার(১৭ ডিসেম্বর )বুঝে শুনে এর জবাব দেব।
তবে বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়,শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করার কথা প্রধান শিক্ষক জানালেও এখনও ভর্তিকৃত ৭ ছাত্রের টাকা ফেরত দেয়া হয়নি কিংবা আনুষ্ঠানিক কোন নোটিশও দিয়ে জানানো হয়নি। উল্লেখ্য,কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে দুই শিফটে ৪ শাখায় ২৪০জনসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।কিন্তু অনলাইনে আবেদন না করে বিধি বহিভর্ূতভাবে এবং ঢাকার কেন্দ্রীয় লটারির মাধ্যমে চুড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলেও এমন ৭ শিক্ষার্থীকে গত ৩ ডিসেম্বর ভর্তির প্রথম দিনে তাড়াহুড়ো করে ভর্তি কমিটির সদস্যদের আপত্তি সত্বেও জেলা প্রশাসকের সুপারিশের অজুহাতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। ওই সাত শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৪জন ছাত্র কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ৪ শিক্ষকের সন্তান রয়েছে বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে শোকজ আদেশ প্রদান করে মাউশি।