বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩
26 Nov 2024 04:41 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের বিশ্বায়নের পরিস্থিতিতে মানবজাতি ও মানবতা রক্ষায় সব ধরনের যুদ্ধ ও সংঘাতকে বিশ্ববাসীর দৃঢ়ভাবে না বলতে হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘জি-২০ লিডারস সামিট ২০২৩’-এ দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের বর্তমান যুদ্ধজনিত নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী মানবিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে আমরা ফিলিস্তিনে নিরপরাধ-নিষ্পাপ শিশুসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষকে নির্মম হত্যা ও মর্মান্তিকভাবে গণহত্যা করতে দেখছি। এসব জঘন্য হত্যাযজ্ঞ গোটা বিশ্বকে হতবাক করেছে এবং বিশ্বব্যাপী দুর্দশাকে আরো তীব্র এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে মন্থর করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আজকের শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত সম্মানিত বিশ্বনেতাদের প্রতি অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির এক সুরে আওয়াজ তুলতে এবং এ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অবিলম্বে নির্বিঘ্নে মানবিক ত্রাণ পাঠাতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সৎ প্রতিবেশী-সুলভ সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ও বিশ্বব্যাপী এর প্রসার একটি ভালো সূচনা হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারতের চমৎকার সম্পর্ক ‘প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত। প্রতিবেশীরা অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমরা আমাদের সমুদ্রসীমা ও স্থল সীমানা মীমাংসার মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছি।
সরকার প্রধান বলেন, আমি আনন্দিত যে গত এক বছরের জি-২০ প্ল্যাটফর্মে আমাদের আন্তরিক আলোচনা, বিশেষ করে নেতৃবৃন্দের এ শীর্ষ সম্মেলন আমাদের মধ্যে উদ্দেশ্য ও দায়িত্ববোধের সঞ্চার করেছে। আমাদের বিশ্ব-পরিবারের সকলের সুস্থতা নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই চেতনায় আমি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ১ মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনে আপনাদের আন্তরিক সমর্থন চাই।
তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফলকে এগিয়ে নিতে আজকের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। জি-২০ নয়াদিল্লি নেতাদের ঘোষণা গ্লোবাল সাউথের প্রকৃত উদ্বেগ ও সমস্যাকে প্রতিফলিত করে। জি-২০ নেতারা নয়াদিল্লিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, প্রযুক্তি রূপান্তর, ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো ও নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত, উন্নয়নের বিভিন্ন চাহিদা পূরণে বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছেন। একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এটি অপরিহার্য।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৫ বছর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য ২৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে এ হ্রাস পেয়েছে এবং অন্যান্য অনেক কিছুর মধ্যে মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়েছে।