সোমবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৩
24 Nov 2024 07:50 am
ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি সাবমেরিন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সাবমেরিনে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব হলো এগুলো সঠিক নিশানায় আঘাত হানতে অত্যন্ত কার্যকর। একই সঙ্গে এসব ক্ষেপণাস্ত্রে পারমাণবিক অস্ত্র যুক্ত করেও নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো যায়।
মার্কিন নৌবাহিনী রোববার মধ্যপ্রাচ্যে সাবমেরিন পাঠানোর কথা ঘোষণা দিয়ে জানায়। যুক্তরাষ্ট্রকে সাধারণত এভাবে ঘোষণা দিয়ে সাবমেরিনের অবস্থান জানানোর কথা বলতে দেখা যায় না। সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার ঝুকি তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা দেখাতে যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) আওতাধীন। রোববার এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে সেন্টকম জানায়, ৫ নভেম্বর ওহাইও শ্রেণির একটি সাবমেরিন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের আওতাধীন এলাকাতে এসে পৌঁছেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো সেই সাবমেরিনের ছবিও প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীন শাখা সেন্ট্রাল কমান্ড। তাতে দেখা যায়, সুয়েজ খাল দিয়ে মার্কিন সাবমেরিনটি তার গন্তব্যে যাচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। সেদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। এর মধ্য দিয়ে ইসরাইল–ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এর পর থেকে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি ও তৎপরতা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে দুটি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরিসহ বহু যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে।
একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করারও ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ অভিযান পরিচালনায় দক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের একদল কমান্ডো সেনা গাজা যুদ্ধের জন্য ইসরাইলি সামরিক বাহিনীকে পরামর্শ দিচ্ছে। তবে এই কমান্ডোর সংখ্যা কত, তা জানানো হয়নি।
এখানেই শেষ নয়, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র আরব দেশগুলোতেও সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। সৌদি আরবে পাঠিয়েছে টার্মিনাল হাই অ্যালটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) নামে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এ ছাড়া কুয়েত, জর্ডান, ইরাক, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা পাঠানো হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, (গাজা যুদ্ধের কারণে) পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যাতে যুদ্ধ ছড়িয়ে না পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়াশিংটনের মিত্রদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথা ভেবেই অঞ্চলটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে ও হচ্ছে।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন সামরিক অবস্থান নিশানা করে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এ সময়ে ইরানের সমর্থন পাওয়া সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো এসব দেশে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিশানা করে কয়েক ডজন হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটি হামলা হয় ১৭ অক্টোবর সিরিয়ার আল–তানফ্ সেনাছাউনি এবং ১৮ অক্টোবর ইরাকে আল–আসাদ নামে মার্কিন বিমানঘাঁটিতে। এই দুই হামলায় ২১ মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন।