বুধবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
23 Nov 2024 02:43 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- পথের দূরত্ব কমাতে চীনের বিখ্যাত মহাপ্রাচীরের একটি অংশে গর্ত করে ফাঁকা করেছেন কেন্দ্রীয় শানসি প্রদেশের শ্রমিকরা। এই ঘটনায় খনন কাজে জড়িত দু’শ্রমিককে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, ৩২তম গ্রেট ওয়ালের কাছে খনন কাজ করছিলেন স্থানীয় শ্রমিকরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যাতায়াতে সুবিধা এবং দূরত্ব কমাতে খনন কাজের সাথে জড়িত স্থানীয় শ্রমিকরা চীনের এই ঐতিহাসিক মহাপ্রচীর ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার কারণে ৩৮ বছর বয়সী এক পুরুষ এবং ৫৫ বছর বয়সী স্থানীয় এক নারীকে আটক করে পুলিশ। এছাড়াও এই ঘটনায় তদন্ত চলছে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, তারা যাতায়াতের দূরত্ব কমাতে ‘মহাপ্রাচীরের একটি গহ্বর প্রশস্ত করে বড় ফাঁক’ খনন করেছে। আর এই ফাঁক দিয়ে তারা খুব সহজে যাতায়াত করতে পারে। তারা বলেন, তাদের এই কর্মকাণ্ড ‘মহাপ্রাচীরের অখণ্ডতা এবং সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের নিরাপত্তার অপরিবর্তনীয় ক্ষতি’ করেছে।
গত ২৪ আগস্ট প্রাচীরটিতে একটি বিশাল ফাঁক রয়েছে এমন রিপোর্ট পাওয়ার পর কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
জানা গেছে, চীনের মিং শাসনামলে তৈরি করা মহাপ্রাচীরের ৩২তম অংশটি শানসি প্রদেশের ইউজু কাউন্টি দিয়ে গেছে। ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটির নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি প্রাদেশিক পর্যায়ে নিশ্চিত করা হয়। গত ২৪ আগস্ট কর্মকর্তারা জানতে পেরেছিলেন, চীনের প্রাচীরে একটি বড় ধরনের ফাঁক তৈরি হয়েছে।
চীনের মহাপ্রাচীরকে ১৯৮৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেসকো। খ্রিষ্টপূর্ব ২২০ অব্দ থেকে মিং শাসনামলের ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই প্রাচীর বহুবার নির্মাণ পুনর্নির্মাণ করা হয়। চীনের মহাপ্রাচীরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
মহাপ্রাচীরের সুপরিচিত অংশগুলোতে সুন্দরভাবে নির্মিত প্রাচীন ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। তবে এই কাঠামোর অনেক অংশই ভেঙে পড়েছে, কিছু অংশ সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে।
বর্তমানে পর্যটকেরা এই প্রাচীরের যে অংশ দেখেন তার বেশির ভাগই মিং রাজবংশের সময় নির্মিত হয়েছিল।
কয়েক বছর ধরে প্রাচীরের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত বা ভেঙে ফেলা হয়েছে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে। ২০১৬ সালে বেইজিং টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মিং মহাপ্রাচীরের ৩০ শতাংশেরও বেশি সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে গেছে। আর এই প্রাচীরের মাত্র ৪ শতাংশ এখনো ভালোভাবে সংরক্ষিত আছে।