বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩
23 Nov 2024 03:37 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- বগুড়া সদরের ২ সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নাশকতা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের স্বজনরা। গত বুধবার দিবাগত রাতে তাঁদের নিজ বাড়ি থেকে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের সন্ত্রাস বিরোধী নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে বগুড়া সদর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ২ সাংবাদিক হলো, বগুড়া সদরের গোকুল উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর পুত্র আব্দুর রহিম সাজু (৪৩) ও শেখেরকোলার তেলিহারা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত তাহাজ মণ্ডলের পুত্র আমিনুল ইসলাম (৪৫)।
আব্দুর রহিম সাজু মহাস্থান প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার মহাস্থানগড় প্রতিনিধি এদিকে গ্রেপ্তারকৃত আরেক সাংবাদিক মহাস্থান প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দৈনিক মুক্ত সকাল পত্রিকার মহাস্থান বগুড়া প্রতিনিধি। সদর থানা পুলিশের মামলার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হকের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত ২জন সদরের শাখারিয়া মোড়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে জড়ো হন। সেখানে তারা ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণসহ গাড়ি ভাঙচুর করেছিলেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে তাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। এই সময় পুলিশ জামায়াত নেতা আব্দুল হক সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ৪টি ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে আব্দুর রহিম সাজু ও আমিনুল ইসলাম সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুর রহিম সাজুর বোন ফুয়ারা বেগম বলেন, "আমার ভাই কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী নয়। অতীতে তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলাও দেখাতে পারবে না। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই রাতে তাকে আটক করে কথিত সাজানো সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে৷ সে সাংবাদিক। সে দেশের জন্য কাজ করে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশ কোনো কথা শুনেনি। দ্রুত তার মুক্তি কামনা করি ও সেই সাথে সঠিক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাই। আজ বৃহস্পতিবার মহাস্থান প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা জানি না যে তারা সাংবাদিক। তারা কোন সময় সাংবাদিকের পরিচয় দেয়নি৷ এইব্যাপারে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন৷
এবিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে মহাস্থান প্রেসক্লাবের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ জরুরী সভায় মহাস্থান প্রেসক্লাবের সভাপতি আনিছুর রহমান মিটু বলেন, মহাস্থান প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক আব্দুর রহিম সাজু ও দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা কতটা সত্য পুলিশই ভালো বলতে পারবে। মহাস্থান প্রেসক্লাবের ২ সাংবাদিক তারা দীর্ঘ দিন ধরে সাংবাদিকতা করে আসছে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে একজন দেশের সুনাগরিক হিসেবে সবার দল মত থাকতেই পারে। তবে কোন দিন তাদের রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত দেখি নাই। কোন সাধারণ অসহায় মানুষ যাতে অন্যায় ভাবে পুলিশের হেনস্তার শিকার না হয় এজন্য মহাস্থান প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জেলার উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দুই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানানো হয়েছে।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন মহাস্থান প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি তাহেরা জামান লিপি, সাধারণ সম্পাদক এস আই সুমন, যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী শিপন, প্রচার সম্পাদক আব্দুল বারী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাফায়াত সজল, তথ্য ও সাহিত্য সম্পাদক মুনসুর রহমান আকাশ, নির্বাহী সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল বাছেত, আব্দুল হান্নান টগর, আজিজুল হক বিপুল, রহেদুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, আব্দুর রহিম, শাকিকুল ইসলাম শাকিল প্রমূখ।