মঙ্গলবার, ০১ আগস্ট, ২০২৩
24 Nov 2024 12:12 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ- আষাঢ়ের প্রথম দিনটি ছিল বর্ষণমূখর। আশায় বুক বেঁধে ছিলেন চাষিরা প্রকৃতির বৈরিতা কাটলো বলে। আষাঢ় তার আগমনী বার্তা জানান দেওয়ার ঠিক দু-একদিন পরেই আবার রুদ্রমূতি ধারণ করে প্রকৃতি। মাসের মাঝামাঝি সময়ে টানা কয়েকদিন অবিরাম ঝরতে থাকে বৃষ্টি। নদী, নালা, খাল, বিল ফিরে পায় তার হারানো যৌবন। পাট কাটার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর পাটচাষিরা। কেটেও ফেলেন কেউ কেউ। কিন্তু বাধ সেধেছে প্রকৃতি। অন্তত টানা কুড়ি দিন বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং নদীর টানে শুকিয়ে যায় খাল, বিল ও নালার পানি। এ অবস্থায় জাগানো পাট নিয়ে সংকট এবং পাটের মান নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন পাটচাষিরা।
উপজেলা পাট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, চলতি বছর উপজেলায় পাট চাষ করেছেন বেশ কয়েক হাজার চাষি, যারমধ্যে পাট অধিদপ্তর থেকে প্রণোদণা পেয়েছেন ২ হাজার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পেয়েছেন ৪ হজার ২শ জন পাটচাষি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৮৬২ হেক্টর আর চাষ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমি, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ ৯৭ হেক্টর কম। আর গত বছরের তুলনায় চাষ কম হয়েছে ১শ ৪৫ হেক্টর।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বরিশাল, মহদীপুর হোসেনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন নালা ও সড়কের পাশে ফুট হিসেবে পরিচিত অপেক্ষাকৃত নীচু খালে পাট জাগিয়েছেন চাষিরা। বেশকিছু দিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়া, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি কমে যাওয়া এবং খরতাপের প্রভাব পড়েছে খালবিল ও বিভিন্ন জলাশয়ে। শুকিয়ে গেছে পানি। শুকনো বা অল্প পানিতে জাগগুলো পড়ে যাওয়ায় পাট নিয়ে বিপদে পড়েছেন পাটচাষিরা। কালো রং ধারণ করেছে পাটকাঠি থেকে ছাড়ানো আঁশগুলো। শ্যালো মেশিন কিংবা থালা বা গামলা দিয়ে জাগগুলোর ওপর পানি ছিটিয়ে দিতে দেখা যায় কিষাণ-কিষাণীদের। আশা তবুও পাটের রং যেন সোনালি হয়।
জমির আইল বেঁধে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে সেচ দিয়েও পাট জাগাচ্ছেন কেউ কেউ। পাট কেটে রেখে বৃষ্টির আশায় আকাশ পানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অনেকেরই পাট আবার শুকিয়ে লালচে রং বা পাটাশি হয়ে পড়ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফাতেমা মিসু বলছেন, পাটের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পাটের মান একটু নিম্ন মানের হতে পারে। সেজন্য রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট গাছ থেকে ছাল ছড়িয়ে নিয়ে গর্ত করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে। তাতে আঁশের রং সোনালি হবে এবং চাষি ভাইয়েরা দামও পাবেন বেশ ভালো।