মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩
25 Nov 2024 05:54 pm
সফিকুল আলম দোলন,পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি ঃ- রুপকল্প ২০৪১ এবং এসডিজি-৪ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিদ্যালয় বহির্ভুত (ঝরে পড়া এবং ভর্তি না হওয়া ) ৮-১৪ বছর বয়সী শিশুদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য দ্বিতীয় বার সুযোগ দেয়া এবং অনুষ্ঠানিক শিক্ষার মুলধারায় নিয়ে আসার জন্য প্রাথমিক ও গণ শিক্ষামন্ত্রণালয়ে অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে বে-সরকারী সংস্থা আর ডি আর এস বাংলাদেশের নেতৃত্বে এনজিও আরডিআরএস,এসএসইউএস,আরপিএন জেলার ৪টি পঞ্চগড় সদর,আটোয়ারী,বোদা,দেবীগঞ্জ)উপজেলায় নিবিড় পল্লী গ্রামে ২৮০ টি স্কুলে ৮ হাজার ৪শ জন শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ,শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও স্কুল পরিচালনায় কারিগরী সহায়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাদান করে যাচ্ছে । এ সব শিক্ষার্থী উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করে তাদেরকে শিক্ষার মুলধারায় সম্পৃক্ত করবে।
এসব স্কুলে ৮-১৪ বছর বয়সী (ঝরে পড়া এবং ভর্তি না হওয়া ) ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে । এসব স্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিকা দ্বারা মাতৃস্নেহে লেখাপড়া শেখানো হয় বলে ছেলেমেয়েরা নিয়মিত স্কুলে আসে,মনোযোগী হয়,সময়ের কাজ সময়ে করে। আকর্ষণীয় পাঠদানের পাশাপাশি সহপাঠত্রæমিক কাজ ও বিনোদনের মাধ্যমে পাঠদান করে বলেই ছেলেমেয়েরা ঝরে পড়ে না ,ফলে ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয়মুখী হয়ে তাদের লেখাপড়া চালাতে সক্ষম ।এ ছাড়া উক্ত স্কুল গুলোতে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান অব্যাহত রাখায় এ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পরবর্তীতে শিক্ষা ব্যবস্থার মুল ধারায় ফিরে আসার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।অভিভাবক সভা হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পড়াশুনার অগ্রগতি সর্ম্পকে শিক্ষিকা ও স্কুল কমিটির মাধ্যমে জানতে পারছে ।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে স্থানীয় সংস্থার সামর্থ্য বৃদ্ধি,কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আর্থিক এবং কারিগরী সহায়তার মাধ্যমে এ কর্মসূচীসহ অনান্য সকল কার্যত্রæম সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন সম্ভবপর হচ্ছে ।এর পাশাপাশি কর্ম এলাকায় উপকারভোগীসহ সমাজের সর্বস্তরে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত হচ্ছে ।
আরডিআরএস, এসএসইউএস,আরপিএন বাস্তবায়িত এ কর্মসূচীতে ব্যবহৃত উপকরণ(বই,খাতা,পেন্সিল,স্কুল ড্রেস,স্কুলব্যাগ) বিনামূল্যে সরবরাহের ফলে উপকারভোগী পরিবারের বাড়তি অর্থ যোগান দিতে হয় না বরং শিক্ষাউপবৃত্তি প্রদান করা হবে।এতে অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে উঠে।
স্থানীয় সরকার,স্থানীয় প্রশাসন,প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জেলা/উপজেলা কর্মকর্তাদের সমন্বয় সাধন এর মাধ্যমে এ শিক্ষা কর্মসূচী বাস্তবায়িত হয় বলে তারা তাদের কোমলমতি শিশুদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম থেকে বিরত রাখে।
এসএসইউএস সংস্থার উপজেলার বারোঘরিয়া পাড়া উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্বপ্না বেগম বলেন,যে সকল সুবিধাবি ত শিশুরা লেখাপড়ার সুযোগ পায় না তারা এই বিদ্যালয়ে মাতৃস্নেহে শিক্ষা গ্রহণে সুযোগ পাচ্ছে। অপরদিকে পরিবারের কাজের পাশাপাশি শিক্ষিকা হিসাবে সম্মানী ভাতা পেয়ে পরিবারের বাড়তি আয়ে যোগান দিতে পারায় পরিবারে আমার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংস্থা এসএসইউএস সংস্থার উপজেলা প্রোগাম ম্যানেজার মো.আনোয়ার হোসেন এর নিকট আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন কর্মসূচী সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কর্মসূচীটি জেলায় বিদ্যালয় বহির্ভুত শিশুদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন ও শিক্ষা ব্যবস্থার মুল ধারায় ফিরে আসার সুযোগ সৃষ্টি করেছে ।যেহেতু করোনা মহামারীর কারণে কর্মসূচিটি যথাসময়ে শুরু করা যায় নি কর্মসূচির মেয়াদ আরো বেশী স¤প্রসারিত হলে প্রাথমিক শিক্ষাচত্রæ সমাপনের হার বৃদ্ধিসহ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগটি সফল হবে।
এ শিক্ষা কর্মসূচীটি চলমান থাকলে বিদ্যালয় বর্হিভ‚ত শিশুদেরকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর একীভ‚ত,সমতাভিত্তিক ও মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা ও তাদেরকে শিক্ষার মুলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরডিআরএস বাংলাদেশের জেলা প্রোগাম ম্যানেজার মো.জহিরুল হক বলেন, আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন কর্মসূচীটি জেলায় বিদ্যালয় বহির্ভুত শিশুদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন ও শিক্ষা ব্যবস্থার মুল ধারায় ফিরে আসার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।কর্মসূচিটির মেয়াদ অনুযায়ী ৩০জুন ’২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হবে তবে কর্মসূচির মেয়াদ আরো বেশী স¤প্রসারিত হলে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগটি সফল হবে।