বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩
26 Nov 2024 03:48 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- একটানা ১২ বছর ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকার আইন করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যদের আপত্তির মধ্যে এ বিলটি পাশ হয়। এর আগে একজন একটানা ৯ বছর পরিচালক পদে থাকার আইন ছিলো।
বুধবার সংসদের অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) বিল, ২০২৩ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলটি উত্থাপন করে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি পাস হলে দেশে একটি আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিল পাসের আগে জাতীয় পার্টির সদস্যরা এ বিলের প্রতিবাদে ওয়াক আউট করেন।
প্রস্তাবিত বিলের সমালোচনা করে ময়মনসিংহ-৮ আসনের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, নতুন সংশোধনী বিলে বড় ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে এবং আইনটি পাসের আগে তা সংশোধন করা উচিত। বিলটির ওপর জনমত যাচাই করা দরকার।
টাঙ্গাইল-৬ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু প্রস্তাব করেন, পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো ও খেলাপি ঋণগ্রহীতার ঋণ সুবিধা বিষয়ক দুটি সংশোধনীর। তিনি বলেন- আপাতত বলবৎ অন্য কোনও আইন অথবা কোনও ব্যাংক-কোম্পানির সংঘস্মারক ও সংঘবিধিতে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০১৮ কার্যকর হবার পর কোনও ব্যক্তি কোনও ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক পদে একাদিক্রমে ১২ বছরের অধিক অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।
খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ঋণ ছাড় বিষয়ক সংশোধনী প্রস্তাবে তিনি জানান, পরস্পর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনও খেলাপি ব্যক্তি বা ক্ষেত্রমত, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হয় অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি কর্তৃক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হবার ক্ষেত্রে কোনও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি বলে গণ্য হবে না, এবং এইরূপ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে তৎকর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ সুবিধা প্রদান করা যাবে।
ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর বিধান অনুযায়ী একটি ব্যাংকের তিনজনের বেশি পরিচালক একই পরিবারের হতে পারবেন না। আইনে বলা হয়েছে, বর্তমানে একটি পরিবার থেকে চারজন পরিচালক থাকতে পারেন, তবে এটি এখন সর্বোচ্চ তিনজনে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এছাড়াও, আইনে ব্যাংক থেকে বোর্ড সদস্যদের ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থার বিধান রয়েছে। কিছু বিধান শেয়ার করে মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।
কোনো ব্যাংক সময়মতো ঋণখেলাপিদের তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকটিকে ৫০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হতে পারে। প্রতিদিন বিলম্বের জন্য ব্যাংককে অতিরিক্ত ১ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মের নিবন্ধকের অধীনে তাদের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান এবং কোম্পানির নিবন্ধন সংক্রান্ত কঠোর বিধান রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির তালিকা থেকে বাদ পড়ার পর ৫ বছর অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত একজন ইচ্ছাকৃত খেলাপি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার যোগ্য হবেন না। কোনো ব্যাংকের কোনো পরিচালক ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পদ শূন্য ঘোষণা করতে পারে বলেও জানান তিনি।
আইনে বলা হয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি বলে গণ্য হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩ শিগগিরই কার্যকর করার শর্ত দিয়েছে। আইএমএফ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলির জন্য নন-পারফর্মিং ঋণ ১০ শতাংশ কমাতে বলেছে।
বাংলাদেশ জার্নাল