মঙ্গলবার, ০৬ জুন, ২০২৩
26 Nov 2024 12:25 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- ১৯৯৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন বাংলাদেশ সৃষ্টির বীজবপন হয়েছিল। ৬৬ সালের ৭ই জুন ৬ দফা আন্দোলনের দাবিতে দেশব্যাপী যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল শ্রমিক নেতা মনু মিয়া তার প্রথম শহীদ। ৬৬ সালের পর থেকে ৭ই জুন ‘শহীদ মনু মিয়া দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সরকারের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাণী প্রদান করে থাকেন।
মনু মিয়ার রক্তের মধ্য দিয়েই ৬ দফা আন্দোলন সফল পরিণতির দিকে এগিয়ে চলে। পরবর্তীতে ৬ দফার সাথে ১১ দফা যুক্ত হয়ে ১৯৬৯ সালে আইয়ুব শাহীর বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। আইয়ুব শাহীর পতন ঘটে এবং জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা দখল করে ৭০’র সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করেন। ৭০’র নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গোটা পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। কিন্তু পাকিস্তানী সামরিক শাসকরা বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা না দিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ঘোষণা করেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”। যার ফলশ্রম্নতিতে স্বাধীন—সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে শহীদ মনু মিয়ার অবদান অস্বীকার করার নয়। শহীদ মনু মিয়া তেজগাঁও এলাকার একজন পরিবহন শ্রমিক নেতা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত রাজনৈতিক সংবেদনশীল শ্রমিক নেতা ছিলেন। আমরা তাঁর এই আত্মদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাই মনু মিয়াকে আমাদের স্মরণ করা প্রয়োজন এবং এই দিবসটিকে “শহীদ মনু মিয়া দিবস” হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাবে পালনের দাবি জানাচ্ছি।
আজ ৬ জুন ২০২৩ইং মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় সেগুনবাগিচাস্থ কচিকাঁচার মিলনায়তনে জাতীয় কারিগর ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন (বাজাফে—৪৩) এর উদ্যোগে ঐতিহাসিক “শহীদ মনু মিয়া দিবস” উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ‘মনু মিয়া পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জননেতা শাজাহান খান এমপি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
জাতীয় কারিগর ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন, জাতীয় কারিগর ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সহ—সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ বাছির, অর্থ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, নারী বিষয়ক সম্পাদক নুরুন নাহার, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হোসেন স্বপন, মোঃ আলাউদ্দিন সরদার, মোঃ আবু হানিফ শেখ, নাজমুল হোসেন, মোঃ সেলিম, আনিসুর রহমান মিলন, আরিফুল হক আরিফ প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান এমপি আরো বলেন, শহীদ মনু মিয়ার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে যে উদাহরণ তৈরি করেছেন বর্তমান শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুধাবন করতে হবে। মনু আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে শ্রমিক শ্রেণী চাইলে গোটা দেশ এবং সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে। এজন্য শ্রমিক শ্রেণীকে সচেতন ও সংগঠিত করতে হবে। সচেতন ও সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণীই হচ্ছে প্রকৃত শক্তি। এই শক্তি মানব জাতিকে শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে পারে।
অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে যাঁরা দেশের জন্য ও শ্রমিক আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছেন তাঁদের “শহীদ মনু মিয়া পদক” প্রদান করা হবে। এ বছর টাঙ্গাইলের বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সবুর খান বীরবিক্রমকে শহীদ মনু মিয়া পদক প্রদান করা হয়। মরহুম সবুর খানের পক্ষে তাঁর স্ত্রী পদক গ্রহণ করেন।