শনিবার, ০৬ মে, ২০২৩
30 Nov 2024 10:30 pm
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃগাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রায়হান মিয়া নামের এক যুবককে পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি দেওয়ার নামে ৭ লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগ ওঠেছে। এই অভিযোগ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। এই টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে উল্টো জেলহাজতে বাস করতে হচ্ছে প্রতারণার শিকার রায়হানসহ আরও তিনজনকে। সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বৈষ্ণবদাস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে শনিবার (৬ মে) দুপুরে সাদুল্লাপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী রায়হান মিয়ার বাবা সেকেন্দার আলী আয়নাল ও তার স্বজনরা। এতে আয়নালের স্ত্রী রুপিয়া বেগম, মেয়ে সিমা বেগম, রসুল ইউপির সাবেক সদস্য লাইলী বেগম, আতাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।এ সময় সেকেন্দার আলী আয়নাল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি (সাময়িক বহিষ্কৃত) ও ছাপরহাটি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে বকুল বিশ্বাসের সঙ্গে সাদুল্লাপুরের শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও পশ্চিম দামোদরপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের পূর্ব পরিচয় রয়েছে। এই সুবাদে আমার ছেলে রায়হান মিয়াকে টাকার বিনিময়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার জন্য তাদের মাধ্যমে আমাকে প্রস্তাব করেন। এরপর ৭ লাখ টাকা দিলে চাকরি হবে মর্মে আমাকে জানায় বকুল বিশ্বাস। ছেলেটির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করে বকুল বিশ্বাসকে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম দফায় ৮০ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফায় ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা বকুল বিশ্বাসকে পরিশোধ করেছি। এরপর আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। এক পর্যায়ে ২৬ এপ্রিল এই ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার জন্য আমার বাড়িতে বকুল বিশ্বাস আসেন। এরপর তার একটি এসএমএস ও আচারণ বিধি সন্দেহ হয়। যা সম্পন্নভাবে প্রতারণার চেষ্টা প্রমাণিত হয়। এই অপকর্মের কারণে তার কাছে প্রদান করা ৭ লাখ টাকা ফেরত চাওয়া হয়।
এ নিয়ে তার সঙ্গে রাতভর আলোচনা চলছিল। এসময় শ্রীরামপুরের আব্দুর রাজ্জাক, পশ্চিম দামোদরপুরের জাহিদুল ইসলাম, আমার ছেলে রায়হান মিয়া ও মেয়ে জামাই কবিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এরই মধ্যে ২৭ এপ্রিল ভোরবেলা সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত সকলকে থানায় নিয়ে যায়। এখান থেকে পুলিশ ২৮ এপ্রিল আব্দুর রাজ্জাক, জাহিদুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম, রায়হান মিয়া ও বকুল বিশ্বাসকে সুন্দরগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। এরপর এই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল ইসলাম বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে আমার কাছে থাকা টাকা দেওয়ার প্রমাণিত চেক ও স্ট্যাম্প জমা নিয়ে পরবর্তী কোনো সমাধান করেনি। এমন কি চেক ও স্ট্যাম্পগুলো আমাকে ফেরত দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে প্রতারক এই বকুল বিশ্বাস কৃষক লীগের সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বকুল বিশ্বাসকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার ছোট ভাই গোলাম আজম বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করেন। এই এজাহারের আসামি হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক, জাহিদুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম ও রায়হান মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তারা এখনো জেলহাজতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বকুল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল হক বলেন, আয়নাল হয়তো বকুল বিশ্বাসের কাছে টাকা পেতে পারে। তবে থানায় কোনো চেক কিংবা স্ট্যাম্প নেওয়া হয়নি।