সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৩
30 Nov 2024 03:53 am
শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি আবু সাঈদ ও সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আইনীবীদের কল্যাণ তহবিলের এফডিআরের ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনেছে কার্যনির্বাহী কমিটি।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবু সাঈদ ও জহিরুল ইসলামের আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে ২৫৫ জন নিবন্ধিত আইনজীবী রয়েছেন। তাদের ভোটে প্রতিবছর ১৫ সদস্যর কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৬৫ লক্ষ টাকা এফডিআর করা হয়। এরপর ২০১৯ সাল সাল পর্যন্ত আরো ৬৫ লক্ষ টাকা এফডিআর করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সাল হতে ২০২১ সালের মধ্যে এফডিয়ারের ওই ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ও তার লভ্যাংশের ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে। ওই সময়ে আবু সাঈদ ২ দফা সভাপতি ও ২ দফা সাধারন সম্পাদক হন। আর জহিরুল ইসলাম ১ বার সভাপতি ও ২ বার সাধারন সম্পাদক ছিলেন। এবছর পুনরায় আবু সাঈদ সভাপতি নির্বাচিত হন। আত্মসাত করা টাকার মধ্যে গত সপ্তাহে আবু সাঈদ ৪০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। পুনরায় সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা শরীয়তপুরের কোন আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না।
শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিলের এফডিআরের এক কোটি ৩০ লাখ ও এফডিআরের লভ্যাংশের ৫০ লাখ মোটসহ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এ সকল টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তখন আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও
সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছিলেন আবু সাঈদ ও জহিরুল ইসলাম। এফডিআরের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সামনে আসলে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকে খোঁজ নেই। কোন ব্যাংকেই আইনজীবী সমিতির নামে এফডিআরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তখন চাপে পড়ে আবু সাঈদ ৪০ লাখ টাকা ফেরত দেন। যেহেতু আইনজীবীদের আমানত, কল্যাণ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এটি একটি গর্হিত অপরাধ। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ওই দুজনের সমিতির সদস্য পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সভায় আলোচনা হবে। সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা শরীয়তপুরের কোন আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সমযে এফডিআর ম্যাচুরিটি হওয়ার তথ্য আমাকে জানানো হয়েছে। আবু সাঈদ বিভিন্ন সময় এফডিআর করার কথা বলে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও চেকে সই নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি এফডিআরের কপিও আমাকে দেখিয়েছেন। এখন মনে হচ্ছে ওই গুলো নকল। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে তিনি স্বীকার করেছেন টাকা ফেরত দিবেন। ইতোমধ্যে ৪০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। আর এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এ ব্যাপারে আইনজীবী সভাপতি সভাপতি আবু সাঈদ বলেন,একটি এফডিআর ম্যাচুরেট হয়েছে। ওই এফডিআরের ৪৯ লাখ টাকা টাকার আমার একাউন্টে জমা হয়েছিল। তার থেকে ৪০ লাখ টাকা গত সপ্তাহে আমি দিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে আর কোন টাকার বিষয়ে এই মুহূর্তে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না। বিষয়টি যেহেতু তদন্ত করা হবে, তাই তদন্ত হওয়া পর্যন্তই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।