সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩
22 Nov 2024 02:04 pm
‘আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছি। আর সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একজন মানুষের উত্থান হয়েছে।’ কিছুদিন আগে অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি অনুষ্ঠানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ।
আলোচিত হিরো আলম প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অভিনেতা মামুনুর রশীদের এ মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল শুরু হয় নানা মাধ্যমে। ইতোমধ্যে অনেকে নানা কথা বলেছেন। কেউ হিরো আলমের পক্ষে, আবার কেউ মামুনুর রশীদের পক্ষে। সেসবের মধ্যে অধিকাংশই ছিল বর্ষীয়ান অভিনেতার মতের পক্ষ।
মামুনুর রশীদের করা মন্তব্য ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ ও ‘হিরো আলম’ প্রসঙ্গে এবার কথা বললেন আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সোমবার (২৭ মার্চ) ফেসবুক ভেরিফায়েড প্রোফাইলে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘রুচির দুর্ভিক্ষ আচমকা আকাশ থেকে পড়ে না। প্রথমে খরায় বা বন্যায় রুচির উৎপাদন নষ্ট হয়। তারপর শুরু হয় দুর্ভিক্ষ।’
তিনি লেখেন, ‘খরা এবং বন্যা মূলত তৈরি করে তারাই, যারা রুচির চাষ করে। তাদের তখন যথেষ্ট সময় নেই রুচি উৎপাদনের জমিকে উর্বর রাখার, তারা ব্যক্তিগত গোলার ফসল নিয়েই বা সাফল্য নিয়েই তখন তৃপ্ত।’
এ লেখিকা লেখেন, ‘আজ অরুচি আর মিথ্যায় ঠাসা সমাজে নোংরা নষ্ট ওয়াজিরা, যেকোনো শিল্পী-সাহিত্যিকের থেকে বেশি জনপ্রিয়। অরুচি উৎপাদক হিরো আলম জনপ্রিয়। এর দায়ভার অবশ্যই রুচিকৃষকদের।’
সবশেষ তিনি লেখেন, ‘আসলে রুচি আর অরুচি চিরকালই পাশাপাশি বাস করেছে। রুচিকে ছাপিয়ে অরুচি যখন সর্বত্র বিরাজ করে তখনই কিছু লোক নড়ে চড়ে বসে। অরুচি তখনই সর্বত্র বিরাজ করে, যখন তাকে সর্বত্র বিরাজ করতে দেয়া হয়। রুচির পোশাকও গ্রাস করে নিয়েছে অরুচি। শাড়ির ওপর আটের দশকে মেয়েদের চাদর চাপাতে বাধ্য করা হয়েছিল, একে মেনে নিল সমাজ। শাড়ির ওপর এরপর হিজাব চাপানো হলো, এরপর বোরখা চাপানো হলো, এরপর নিকাব চাপানো হলো। এই পদ্ধতিতে শাড়ি হারিয়ে গেল, প্রকট হয়ে উঠলো নারীবিরোধী অপসংস্কৃতি। মুখ বুজে থাকাই রুচিকে অরুচির কাছে সমর্পণ করে।’