|
৭১ভিশন ডেস্ক:- পিঁয়াজের দাম বাড়ানোর দাবিতে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের কৃষকরা মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে ২০০ কিলোমিটার পদযাত্রা করেছে।
বিক্ষোভের কারণে কর্তৃপক্ষ পিঁয়াজ চাষীদের জন্য কিছু আর্থিক ত্রাণ ঘোষণা করেছে। কিন্তু কৃষকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, তারা পিঁয়াজ কাটতে এবং বাজারে নিয়ে যেতে শ্রমিক নিয়োগের জন্য অর্থ ব্যয় করতে চান না। কারণ তারা ফসল উৎপাদনের খরচই তুলতে পারছেন না। কৃষকদের মধ্যে একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ পাঠানোর পর হতাশায় তার ফসল পুড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যরা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পিঁয়াজের পার্সেল পাঠিয়েছেন।
ভারত বছরে দুই কোটি ৪০ লাখ টন পিঁয়াজ উৎপাদন করে। চীনের পর ভারত হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পিঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ। রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই অর্ধেকেরও বেশি পিঁয়াজ উৎপাদন হয়। ভারত তার মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রপ্তানি করে। দেশটিতে পিঁয়াজের দাম অত্যন্ত অস্থির। বেশিরভাগ ভারতীয় রাজ্যে সবজিটি রন্ধনপ্রণালীর একটি প্রধান অংশ এবং এর পচনশীলতার কারণে এটি খুব বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে পিঁয়াজের দাম কমার কারণ হচ্ছে, জনবহুল উত্তরের রাজ্যগুলোতে চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। উত্তর প্রদেশ, বিহার ও রাজস্থানে এবার পিঁয়াজের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্ত কুয়ালেকার জানিয়েছেন, অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার পরিবর্তনও উৎপাদন ও দামের উপর প্রভাব ফেলছে।
ভারতে দুটি ঋতুতে পিঁয়াজ চাষ করা হয়- বর্ষা ও শীত। বর্ষার ফসল সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম দিকে কাটা হয়। এই পিঁয়াজের মজুত সময় কম এবং দ্রুত বাজারে পৌঁছাতে হয়। মার্চের মাঝামাঝি থেকে কাটা শীতকালীন ফসল দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
কুয়ালেকার বলেন, “গত বছর, জুলাই-আগস্ট মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছিল, তাই কৃষকরা তাদের চাষে দেরি করেছিল। এর ফলে মার্চ মাসে পিঁয়াজের একটি বিশাল উদ্বৃত্ত রয়েছে, যা ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বাজারে আসতে পারত। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শীতের ফসল যখন বাজারে পৌঁছাবে তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
মহারাষ্ট্রের নাসিকের কৃষকরা জানিয়েছেন, তারা পাইকারি বাজারে প্রতি ১০০ কেজি পিঁয়াজের জন্য মাত্র ২০০ থেকে ৪০০ রুপি পাচ্ছেন। অথচ এই দাম ১০০ রুপির ওপরে থাকলে কৃষক ৪০০ রুপি লাভ করতে পারে।