রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩
21 Nov 2024 08:22 pm
বাংলাদেশের রাজনীতির দুই প্রধান দল বৈধতা ও অবৈধতার বিতর্কে লিপ্ত থাকলেও উভয় দল যথারীতি একমত যে তারা তাদের দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের প্রশ্ন অমীমাংসিত রাখবে।
সে কারণে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অচলাবস্থা আরও গভীরতর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলটির মত প্রকাশের স্বাধীনতা সরকার ব্যবস্থার মধ্যে বহু ক্ষেত্রে বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা ইদানীং সহজেই চোখে পড়ছে। খোদ রাজধানীর কমিটি গঠন কেন্দ্রিক গণতন্ত্র অনুশীলন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। যে দলের এত বড় বিপর্যয়ের পরও দলটি তার শীর্ষ পদগুলো পুনর্বিন্যাসের ঝুঁকি নিতে পারছে না।
দলের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও বড় গলায় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের আওয়াজ তোলেন না। কারণ, তাঁরা জানেন, এ নিয়ে সরব হওয়াটা আদৌ অর্থ বহন নাও করতে পারে। কিন্তু দেশের দুই প্রধান দলের অব্যাহত গণতন্ত্র বিমুখতা এবং একই সঙ্গে নানা ধরনের বুজুর্গীচর্চা দেশকে বিশ্ব দরবারে হেয় করে চলেছে। দেশের বড় দুইটি দল আগে পাঁচ বছর অন্তর সুষ্ঠু নির্বাচনে একমত ছিল। ২০০৬ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সালে এসে সে ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী অবস্থান তারা।
আমার প্রয়াত বাবা "পল্লীবন্ধু এরশাদ" ক্ষমতা ছাড়ার পর সেই দল দুটি নিয়মিত দলীয় কাউন্সিল করা এবং সময়ে সময়ে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দলের কমিটি গুলো পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দিতে শুরু করেছিল। কিন্তু দুই দলই বর্তমানে সেসব নীতি বিসর্জন দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। কার কত পকেট কমিটি আছে, তা নিয়ে দুই দলে প্রতিযোগিতা রয়েছে।যদিও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল গুলোরও এখন একই অবস্হা। এর ফলে দেশ শাসনের মান ও জবাবদিহি উভয়ই কমছে। রাষ্ট্র পরিচালনার দৈনন্দিন কার্যক্রমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত থাকা জরুরি।
এর জন্য প্রয়োজন অব্যাহতভাবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রচর্চা করা । তা নিশ্চিত না করার ফলে গত দের দশকে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বহু ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা চুলোয় গেছে। বিভিন্ন ধরনের নির্বাচন এলেই এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। হয়ে যাওয়া স্হানীয় ও সংসদের উপনির্বাচন গুলোকে কেন্দ্র করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ভাবে আর কত দশক চলবে ? আর কত জনগনকে হয়রানি করা হবে, রাজনৈতিক দলগুলো কবে দেশের মানুষকে শান্তি দিবে ?