বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
22 Dec 2024 06:04 pm
ফিরোজ হোসেন, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় দুই অর্থ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও ২টি প্রকল্পের কোন কাজই হয়নি। ফলে কাজ না হওয়ায় ২টি প্রকল্পের ২ লাখ ৩৫ হাজার ৯২০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন এর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বদলগাছী উপজেলা পরিষদওয়ারী ৩য় পর্যায়ে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর ২২টি প্রকল্প ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৪টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।
পরবর্তীতে অনুমোদিত প্রকল্প (কাবিটা) কর্মসূচীর ১৩ নম্বর প্রকল্প কার্ত্তিকাহার সরদার পাড়া পাকা রাস্তার ধারে জামে মসজিদের গর্ত ভরাট থেকে সংশোধন করে উপজেলা পরিষদের ভিতরে মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের পরিমাণ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯২০ টাকা।
অপরদিকে, ঐ একই অর্থ বছরে (টিআর) কর্মসূচীর অনুমোদিত ৩ নম্বর প্রকল্প সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের ৩নম্বর ভাতশাইল ইটাকড়া বিউটির বাড়ীর পাশের্^ রাস্তায় প্যালাসাইডিং করণ এর স্থলে উপজেলা পরিষদের বাসাবাড়ির আঙ্গিনায় মাটি ভরাটে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। এই ২টি প্রকল্পের মোট বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৩৫ হাজার ৯২০ টাকা।
২০২০-২১ অর্থ বছর গত জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হয়ে দুই অর্থ বছর পেরিয়ে ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাস্তবে এ ২টি প্রকল্পের কোন কাজই করা হয়নি। সরে জমিনে গিয়ে উপজেলা পরিষদের ভেতরে এসব প্রকল্পের কোন কাজ চোখে পড়েনি। কাজ সমন্ধে জানেনা উপজেলা পরিষদের ভিতরে বসবাস কারি ও জনসাধারনেরা।
টিআর ৩ নং প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপি ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আমিরুল ইসলাম এর সাথে কাজ না হওয়া বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, প্রকল্পের কাজ হয়েছে কিনা আমি জানিনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিসের লোক কিছু কাগজ দিয়ে বলেন এটা ইউএনও স্যারের কাজ স্যার নিজেই এই কাজগুলো করবেন আপনি শুধু স্বাক্ষর করেন। ওই কাগজগুলোতে আমি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। কাজ হয়েছে কিনা জানিনা।
কাবিটা প্রকল্পের সভাপতি (পিআইসি) বদলগাছী সদর ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পিআইও অফিসের অফিস সহায়ক আমাকে ডেকে বলেছে ইউএনও স্যারের প্রকল্প স্যার নিজে কাজ করবেন আপনাকে স্বাক্ষর করতে বলেছে তাই আমি সাক্ষর দিয়েছি । কাজ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। দুটি অর্থ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ত কোন কাজ হয়নি বলে প্রশ্ন করলে তিনি দাপটের সাথে বলেন, কাজ না করলেও আমার কিছু হবেনা কারণ প্রকল্পটি ইউএনও স্যার নিজে করবেন বলেছেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহায়ক সুমন বলেন, আমি আফিসের একজন ছোট কর্মচারী আমাকে শুধু প্রকল্পের সভাপতিদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিতে বলেছিলো ইউএনও স্যার। তাই আমি সেই সময় শুধু স্বাক্ষর নিয়েছি । কাজ হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা।
এ ব্যাপারে বদলগাছী উপজলার তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউএনও স্যার উপজেলা পরিষদের ভিতরে প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন। আমি স্যারকে বারবার কাজ করতে বলেছি কিন্তু তিনি শুনেনি। আমি বদলগাছীর দ্বায়িত্ব বুঝে দিয়েছি। এখনো তিনি কাজ করেনি সেটি আমি জানিনা।
বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ময়নুল ইসলাম বলেন, এই দুটি প্রকল্প আমার আগের পিআইও স্যারের সময়ের তাই আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে আমি খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবো।
বদলগাছী উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বলেন, এটাতো আমার জানা নেই, আমি এখানে আসার আগে হয়তোবা হতে পারে। আমাকে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারবো না।