রবিবার, ০৮ জানুয়ারী, ২০২৩
24 Nov 2024 09:12 am
পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ রংপুরের পীরগঞ্জে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ১৯টি অবৈধ ইট ভাটার অবস্থান। এ সব অবৈধ ইট ভাটায় প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় দিন দিন যোগ হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন নতুন-নতুন ইট ভাটা।
এ সব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ফলে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা বলে জানায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। উপজেলার ৫৪ টি ইট ভাটার মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ১৯টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। যে সকর ইটভাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন সেগুলো হচ্ছে, উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের পালগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শমস দিঘী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ২’শ মিটার দুরত্বে মকবুল ইসলামের এম ইউ বি ইটভাটা।
বড়দরগাহ্ ইউনিয়নের ডাসারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ২’শ মিটার দুরে জোয়াদ মন্ডলের জেবিএফ নামের ইট ভাটা। কুমেদপুর ইউনিয়নের বাজেশিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১’শ গজের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক সাজু মাস্টারের এবিএস নামে ২টি ইট ভাটা, একই ইউনিয়নের কুমেদপুর চকপাড়া গ্রামে অবস্থিত ফারুক মন্ডলের এফএম ব্রিকস ঝোড়ারঘাট শাহ্ ছালেক দাখিল মাদ্রাসা থেকে মাত্র ৩’শ মিটার কাছে। একই অবস্থা মদনখালী ইউনিয়নেও কাদিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কাদিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং লক্ষীপুর নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৫’শ মিটারের মধ্যে ৩ টি অবৈধ ইট ভাটা।
সে গুলো হচ্ছে শহিদুল ইসলামের ইট ভাটা। মাজহারুল ইসলাম মাস্টারের ১ টি মোস্তাফিজার রহমান মানিক মন্ডলের জিএনএম ভাটাসহ ৩টি ইট ভাটা। টুকুরিয়া ইউনিয়নের মোনাইল দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র ১’শ গজের মধ্যে ১ টি। এ দিকে ছাতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতুয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ছাতুয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাত্র দেড়’শ গজের মধ্যে সবুজ মিয়ার এসআরএম ইট ভাটা অবস্থিত। বড়আলমপুর ইউনিয়নের তাঁতারপুর গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন আবুল কালামের পিকেবি ইট ভাটা।
পীরগঞ্জ ইউনিয়নের মকিমপুর ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৩’শ গজ দক্ষিনে শহিদুল ইসলামের ১টি ও গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ১’শ মিটার দুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক খানের এফ এম ব্রিকস ইট ভাটা অবস্থিত। একই অবস্থা শানেরহাট ইউনিয়নের ৩টি ইটভাটার ২টিই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ভাটাগুলোর ১টি হলো শানেরহাট পার্বতীপুর গ্রামে এইচ এন আর ইটভাটা পার্বতীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও পার্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১’শ মিটারের মধ্যে অবস্থিত অপরটি রায়তীসাদুল্যাপুর গ্রামে জোয়াদ মন্ডলের জে বিএফ।
মিঠিপুর ইউনিয়নের একবারপুর ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কয়েক’শ গজ দুরে ওই ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদার এমএস বিক্স, কাশিমপুর দারুল আমান দাখিল মাদ্রাসার মাত্র ৩০ মিটার দুরে আনিছার রহমানের পিবিএস নামের ১ টিসহ ২টি অবৈধ ইটভাটা চলছে।
চতরা ইউনিয়নের চতরা হাটে অনিক ব্রিক্স চতরা উচ্চ বিদ্যালয়, চতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চতরা আলিম মাদ্রসা, চতরা এতিম খানা ও লিল্লাহ বোডিং এমনকি চতরা ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মাত্র ৫০ গজ নিকটে অবস্থিত। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এই সব ইটভাটাগুলোর জমির মালিকানা ছাড়া কোন কাগজপত্র নেই। পরিবেশ অধিদফতরের নেই কোন ছাড়পত্র। এছাড়া জেলা প্রশাসকেরও কোন অনুমতি নেই ভাটায় আগুন দেয়ার জন্য। এ সব অবৈধ ইট ভাটা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার করে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে সমস্যা হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, পীরগঞ্জে বৈধ ভাটার সংখ্যা ৩/৪ টি। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫’শ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ভাটা গুলোকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় সাংবাদিকদের জানান- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এ সব অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোঃ আকতারুজ্জামান রানা