সোমবার, ০২ জানুয়ারী, ২০২৩
23 Nov 2024 07:42 am
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধরণ মানুষকে এবং মিলছেনা প্রত্যাশিত পুলিশি সেবা। সোমবার (২ জানুয়ারি ২০২৩) এমন দৃশ্য মিলেছে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানায়। নাম মোঃ ওসমান গানি শাহ। তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তার মোটর সাইকেলের লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হারিয়ে যায়। তাই গত ১ জানুয়ারি ২৩ তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান বোয়ালিয়া মডেল থানায়। কিন্তু সেখানে দ্বায়িত্বরত (ডিউটি অফিসার) পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আপনাকে অনলাইনে জিডি করতে হবে এবং বাইরের দোকানে। পুলিশের কথামত বাইরের দোকানে আসলে পড়তে হয় বিড়াম্বনায়। কারন সার্ভার জ্যাম। কোনভাবেই তিনি জিডি করতে পারলেন না। অবশেষে তিনি তার কাগজপত্র ঐ দোকানে রেখে গেলেন। যা এখনও সম্ভব হয়নি। ফেসবুকে অপপ্রচারের কারনে ২ জানুয়ারি দুপুর ১২ টায় দুইজন সংবাদকর্মী বোয়ালিয়া মডেল থানায় আইসিটি আইনে মামলা করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম জানান, এখানে আমাদের কিছু করার নাই। আপনি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে যোগাযোগ করেন। পরে বাধ্য হয়ে ঐ সংবাদকর্মী সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান সহকারি কমিশনার উৎপল চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আগে থানায় একটি জিডি করুন তারপর আমরা দেখবো। পরে থানায় জিডি করতে গেলে পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
থানা থেকে বলা হলো আপনি বাইরে দোকানে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করেন এবং হার্ড কপি আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। তাদের কথামত দোকানে গেলে দোকানদার জানান, অনলাইনে জিডি করা যাচ্ছে না, সার্ভারে সমস্যা। আবার থানায় ফিরে গেলে ডিউটি অফিসার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোসাঃ হাসনা ইনা রীতি বলেন আমাদের কিছু করার নাই। চাইলে আপনি ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। তার কাছে সেই সহযোগিতা চাইলে এবং ওয়েবসাইট এ্যড্রেস চাইলে তিনি বিরক্ত হন। পরে বিরক্তের সুরে সংবাদকর্মীদের সাথে অশালীন আচরন করেন। এরপর সংবাদকর্মীরা উপস্থিত থাকাকালীন সময়ে আরও অনেকে আসেন জিডি করতে। তাদের সকলকে জানানো হয়, জিডি অনলাইনে বাইরের দোকান থেকে করে নিয়ে আসেন। তাহলে পুলিশের এমন দ্বায়িত্ব বিবেচনা করলে প্রশ্ন থেকেই যায় ” এই হয়রানির জন্য দায়ী কে?” পরে আরএমপির অন্যান্য থানায় খোঁজ নিলে একই ভোগান্তির কথা জানা যায়। এবিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া মুখ্যপাত্র অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমি মিটিং এ আছি জরুরি কিছু বলার থাকলে বলুন। জিডি করতে নাগরিক ভোগান্তির বিষয়ে জানালে তিনি জানান, সকল জিডি অনলাইনে করা লাগবে না। শুধু হারানো ও লস এন্ড ফাউন্ড জিডি গুলো অনলাইনে করা লাগবে।
সার্ভারের সমস্যার কথা জানালে তিনি বলেন আগে লস এন্ড ফাউন্ডের বিষয়ে জানতে হবে। ঠিক আছে বলে ফোন রেখে দেন। উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ২১ জুন পুলিশি সেবার মান উন্নয়ন ও কোনো ভোগান্তি ছাড়া একজন নাগরিক ঘরে বসে আইনি সেবা নিশ্চিতকল্পে সফটওয়্যার ও সেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এর সুফল হিসেবে থানায় না গিয়ে কোনো ঝামেলা বা প্রশ্ন পর্ব ছাড়াই ঘরে বসে একজন নাগরিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন এমন প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার চালু করে অনলাইনে জিডি আবেদন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। কিন্তু সেই প্রযুক্তিই এখন ঝামেলার বড় কারন।