সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫
20 Jan 2025 05:59 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- ‘নদী মরে যাওয়া মানে প্রাণ প্রকৃতি, সভ্যতা মরে যাওয়া।নদী হারিয়ে যাওয়া মানে নদী সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া। বুড়িগঙ্গা মরে যাওয়া মানে ঢাকা শহর পরিত্যাক্ত হয়ে যাওয়া।অথচ মানব সভ্যতা উদ্ভবের পেছনে সবচেয়ে বেশী নদ-নদীর ভূমিকা রয়েছে।কারণ, প্রাচীন কৃষিভিত্তিক সমাজের ভিত্তি রচিত হয়েছে নদী-তীরবর্তী ভূমি সেচের মাধ্যমে চাষ-উপযোগী করার মধ্য দিয়ে।আবহমান বাংলায় নদীর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তাই গভীর।এদেশের অর্থনীতি থেকে নদী যেমন আলাদা করা যায় না, তেমনি এদেশের সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ নদী’।
বুড়িগঙ্গা নদীর ৪১ কিলোমিটারে মধ্যে কেরানীগঞ্জ উপজেলার ওয়াশপুর থেকে হযরতপুর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার ভরাট, দখল ও প্রবাহশূন্যতার শিকার হয়ে বিলীন হয়ে নদীর বুকে শহর গড়ে তোলা হয়েছে! ২৫৭টি বর্জ্য ফেলার স্থানে প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা নদী দূষণ চলছে! এ চিত্র আজ সমগ্র দেশ জুড়ে চলমান। আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে এখন থেকে নদীমাতৃক বাংলাদেশের রাজনীতী চাই নদী ও পরিবেশ ভিত্তিক। দেশ বাঁচাতে হলে নদী এবং পরিবেশ ভিত্তিক উন্নয়ন করতে হবে।
বুড়িগঙ্গাসহ বাংলাদেশের নদী দখল-দূষণ মুক্ত করতে নদী সংস্কৃতি, অববাহিকা সংরক্ষণ ও নদী নিরাপত্তা সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের স্বনামধন্য ৪০জন চিত্রশিল্পীদের ‘বুড়িগঙ্গা নদী দখল-দূষণ থেকে রক্ষা করতে ‘নদী ও নারী’ শীর্ষক জলরঙ আর্ট ক্যাম্প শুরু করেছে নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘নোঙর ট্রাস্ট।
গত ১৮ জানুয়ারি, শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বিআইডব্লিউটিএর ‘বালু’জাহাজে করে সোয়ারি ঘাট থেকে বছিলা তুরাগ নদীতে গিয়ে আবার বুড়িগঙ্গা সোয়ারী ঘাট নদীর তীরে বুড়িগঙ্গা দখল-দূষণ পরিস্থিতি পর্বেক্ষণ করেন ক্যাম্পে অংশ গ্রহণকারী ৩০ জন চিত্রশিল্পী। এ সময় শিল্পীরা জাহজে বসে কাগজ কলমে এবং রঙ তুলিতে বুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন দখল-দূষণের করুণ দৃশ্য অংকণ করেন। ভ্রমন শেষে দুপুর ১২টায় শুরু হয় বুড়িগঙ্গার জলে আঁকা ‘নদী ও নারী’শীর্ষক জল রং আর্ট ক্যাম্প। ক্যাম্প উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী অধ্যাপক জামাল আহমেদ।
অধ্যাপক জামাল আহমেদ এ সময় বলেন, বুড়িগঙ্গা অনেক সুন্দর একটি নদী। জায়গাটাও অনকে সুন্দর। কিন্ত নদীটা যদি পরিস্কার দখলমুক্ত হতো তাহলে খুব ভালো লাগতো। বাংলাদেশে এমন কোন চিত্রশিল্পী নেই যে শিল্পী কখনো নদীর ছবি আঁকেন নি। ছাত্র জীবনে আমাদের শিক্ষক শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের সাথে প্রায় সময় আমারা বুড়িগঙ্গা নদীতে ছবি আঁকতে আসতাম। তখনকার প্রাণবন্ত বুড়িগঙ্গাটি নদীটি দখল এবং দুষণে দৃশ্য দেখে অনকে কষ্ট হচ্ছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী ও প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার করা শুধু নোঙর ট্রাস্ট এবং পরিবেশ কর্মীদের একার নয়, আমাদের চিত্রশিল্পী সমাজেরও অনেক দ্বায়িত্ব আছে। বাংলাদেশের নদী এবং পরিবেশ না বাঁচলে আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। দেশজুড়ে নদী ও পরিবেশ রক্ষার নোঙর’র সময় উপযোগী এ উদ্যোগ স্বাগত জানিয়ে আজ থেকে আমরাও যুক্ত হলাম।
শিল্পী তরুণ ঘোষ বলেন, নদী এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য নোঙর’র বুড়িগঙ্গা নদীর জলে আঁকা ‘নদী ও নারী’ শীর্ষক জলরঙ আর্ট ক্যাম্প আয়োজন শুধু বড়িগঙ্গা নদী নয় দেশের অধিকাংশ নদী দখল-দূষণে হারিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদী আয়োজন। নদী ও প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার জন্য গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ কে এগিয়ে আসতে হবে।
চিত্রশিল্পী তৈয়বা বেগম লিপি বলেন, গত ১৫ বছর আগে থেকে সুমন শামস কে বলতাম য, নদী রক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে আমাদের বলবে। সেই কথা মনে করে আজকে আমাদরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নোঙর কে অনেক ধন্যবাদ। আজকে বুড়িগঙ্গা ভ্রমনের সময় দূষনের কারণে দুর্গন্ধে আমার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো। নদীতে কোন অক্সিজেন নেই তাই জলজ প্রাণি নেই, জেলে নেই আমাদরে বেঁচে থাকার জন্য এ নদী রক্ষা করার কোন বিকল্প নেই।
স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী মাহবুবুর রহমান বলেন, নোঙর কে অনেক ধন্যবাদ এ আন্দোলন কে চলমান কখার জন্য এবং আমাদের কে নদী এবং পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ে কথা বলতে দেযার জন্য। বুড়িগঙ্গা নদী আমার কাছে অনেক আবগের নাম। কারণ ছোট থেকে বড় হয়েছি এই নদীর পাড়ে। সেময় এই নদীতে অনেক নৌকা চলাচল করতে। কিন্ত গত ত্রিশ বছরে এই নদীর উভয় পাশে অনকে নতুন শহর গড়ে উঠেছে। এখনো প্রতি নিয়ত অপরিকল্পীত শহর গড়ে উঠছে। এক সময়ের সেই ঐতিহ্যবাহী বুড়ি গঙ্গা নদী এখন দূষিত, বিষাক্ত নদীতে পরিনত হয়েছে। আজকে দেশের নদ-নদী এবং প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা করার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে তার মানে হচ্ছে নদীটি মরেগেছে! তাকে বাঁচাতে হবে। এটা আমাদের জীবনে অনকে একটা দুঃখজনক ঘটনা!
ঢাকা অনেক পুরাতন শহর হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৪৭ সালে আয়ূব খানের সময় দেশ বিভাগের পর আধনিক শহর হিসাবে গড়ে তোলার প্রথম আভাস পাওয়া যায়। তারপর ধারাবাহিক ভাবে নতুর শহর এবং সে পরিকল্পনা ছিলো খুবই ভুল পরিকল্পনা। কারণ সে সময় যারা এই নগর সম্প্রসারণে পরিকল্পনা যারা করে ছিলেন তারো কেউ এই দেশের ভূসংস্থান বিষয়ে ধারণা রাখতো না। তাই তারা শহরটাকে একটা নিরাপদ ভূমিতে গড়ে তুলেছে ধীরে ধীরে ধানমন্ডি, গুলশান, উত্তরা এবং পুর্বাচল পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে।
সরকার এখানে একটা নগর পরিকল্পণা করেছে কিন্ত ডেভলপারদের জন্য একাটা বাণিজ্যিক পণ্য তৈরী করে দিচ্ছে। কারণ সরকার একটি ডেভলপারকে অনুমতি দিচ্ছে এবং অেনেক গুলো পরিবার সেখানে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।এ বিষয়ে যেহেতেু সরকারে কোন নীতিমালা নেই।এ কারণে সরকার নিজেই একটা চাপের মধ্যে রয়েছে পাশাপাশি বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাশে এখন অপরিকল্পিত যে শহর গড়ে উঠছে সেটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না।আমাদের সরকারকে এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ঢাকা ওয়াসা এবং সিটি