শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
15 Nov 2024 03:50 pm
৭১ভিশন ডেস্ক:- বগুড়া শহরের শেরপুর রোড মফিজ পাগলা মোড়ে ডক্টরস ক্লিনিকের ইউনিট-১ এ চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতা ও রোগীর স্বজনরা ক্লিনিকটি ঘেরাও করে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত রোগীর নাম জাহানারা বেগম।তিনি শহরের ভাটকান্দি এলাকার মৃত আব্দুল বারীর স্ত্রী।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় জাহানারা বেগমকে ডক্টর ক্লিনিকের জরুরি বিভাগে আনা হয়।এসময় কর্মরত চিকিৎসক রোগীকে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে বসতে বলেন। সেইসঙ্গে চিকিৎসক আরো বলেন, ডা. মামুনুর রশিদ এসে তাকে দেখবেন।
এর দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ডাক্তার আসেননি।কিন্তু ডাক্তার আসার আগেই জাহানারা বেগম মারা যায়। পরে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মারা যাওয়ায় আশপাশের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং ক্লিনিকটি ঘেরাও করে। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এসে এই মৃত্যুর জন্য ক্লিনিকের চিকিৎসক, নার্স ও মালিককে দায়ী করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
রোগীর স্বজন রাসেল মিয়া জানান, রোগী তার বড় মা হোন।তার বড় মা হঠাৎ অসুস্থ হলে দ্রুত তাকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসেন।এরপর কর্তব্যরত স্টাফ ও নার্স রোগীকে নিয়ে গিয়ে রোগীর ডায়াবেটিস ও প্রেসার মেপে জানান ডা. মামুনুর রশিদ এসে তাকে দেখবেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তারা জানান রোগী মারা গেছেন। শুধুমাত্র ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই তাদের রোগী মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডা. মামুনুর রশিদের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ওই সময় ক্লিনিকে ছিলাম না। রোগী নিয়ে আসার পর ডিউটিরত ডাক্তার দেখেন। এর কিছুক্ষণ পরই রোগী মারা যান।
ডক্টরস ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. মকবুলার রহমান তিনি বলেন, ওই রোগী ডায়াবেটিসের। ডা. মামুনের রোগী। রোগীকে নিয়ে আসার পরপরই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ডা. মামুনের জন্য অপেক্ষায় রাখা হয়। কিন্তু ডা. মামুন আসার আগেই রোগী মারা যান। ওই রোগীর চিকিৎসায় কোনো অবহেলা করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে, রোগী মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত জনতা এবং ওই ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিরা ছুটে আসেন। রোগীর স্বজনরা এসময় ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লিনিকে ভাঙচুর করেন এবং ক্লিনিকের কর্তব্যরত স্টাফদের ধাক্কাধাক্কি করেন।
তারা বলেন, চিকিৎসক, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও স্টাফদের অবহেলাতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারা রোগীদের চিকিৎসার চেয়ে ব্যাবসায়িক দিকটাই বেশি দেখেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএস মঈনুদ্দীন জানান, দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কালের কণ্ঠ