মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
09 Nov 2024 08:47 am
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,হিলি(দিনাজপুর)প্রতিবেদক:-দিনাজপুরের হিলির হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তার সদস্য শাপলা শারমিন একজন মাশরুম চাষি। মাশরুম চাষ করে আজ তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন।অন্যান্য নারীদের স্বাবলম্বী করতে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। মাশরুম চাষ করে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন এই নারী উদ্যোক্তা।
হিলি শহরের হীরামতি সিনেমা হলের পূর্ব পাশে শাপলা শারমিনের স্নেহা মাশরুম ঘর। গত তিন বছর আগে প্রথমে ২৯টি মাশরুম বেড তৈরির মধ্যদিয়ে মাশরুম চাষে যাত্রা শুরু করেন এই নারী উদ্যোক্তা।বর্তমান তার দুইটি মাশরুমের খামার, তাতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার মাশরুমের বেড।বেড তৈরির ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মাশরুম উৎপাদন হয়ে থাকে।প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ কেজি মাশরুম উত্তোলন করেন তিনি।প্রতি কেজি মাশরুমের দাম পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। মাসে তার আয় হয় ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমান তিনি একজন সফল মাশরুম চাষি।তার এই মাশরুম খামার এলাকায় সাড়া ফেলেছে।
এছাড়াও এই নারী উদ্যোক্তা তার স্নেহা মাশরুম ঘরে গড়ে তুলেছেন মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। নারী উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন নারীরা প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন তার স্নেহা মাশরুম ঘরে।
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের আরমিন আক্তার পলি বলেন,আমি একজন নারী উদ্যোক্তা, আমার একটি ছাদ বাগান আছে।পাশাপাশি টব তৈরি করি। আজ মাশরুম চাষি শাপলা আপার বাসায় আসছি মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিতে।তিনি মাশরুম চাষ করে যেভাবে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছে, ইনশাআল্লাহ আমিও মাশরুম চাষ করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলবো।
মাশরুম চাষি শাপলা শারমিন বলেন, প্রথমে তিনটি বাড়ির মুরগী বিক্রি করে ২৯টি মাশরুম বেড তৈরি করি।এরপর ধীরেধীরে দুইটি মাশরুম খামার করে ফেলি।তবে এই খামার তৈরি করতে সরকারি ভাবে সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি আমি।মাশরুম চাষে তেমন কোন ব্যয় হয় না। খড়ের বেড তৈরি করে মাশরুম বীজ দিয়ে মাশরুম চাষ হয়ে থাকে।আমার মাসে যে আয় হয় তা দিয়ে আমার সংসার ভালভাবে চলে।অনেক নারীরা আমার মাশরুম ঘরে আসছেন এবং প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।আশা করছি আমি যেমন এই মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি, অন্যান্য নারীরাও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।
মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ নিতে আসা তাছলিমা আক্তার বলেন, আমার বাড়ি গ্রামে, আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছি। এই স্নেহা মাশরুম ঘরে দুইদিন প্রশিক্ষণ নিবো। আশা করছি আমিও মাশরুম চাষ করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলবো।
হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হামিদা আকতার ডালিম বলেন, আমরা নারী, আমরাও পারি, শহর কিংবা গ্রামে আমরা পৌঁছে যাবো সবখানে।পুরুষের পাশাপাশি আমারও হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে যাচ্ছি।সংসারের হাল ধরতে স্বামীর পাশাপাশি আমরাও আর্থিক সহযোগিতা করছি।আমরা নারীরা পিছিয়ে থাকবো না। আমাদের ইচ্ছে শক্তি দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রোমেনা আক্তার মনি বলেন, মাশরুম একটি পুষ্টিকর খাদ্য, শরীরের অনেক রোগের প্রতিকার হিসেবে কাজ করে।শাপলা শারমিন একজন নারী উদ্যোক্ত।হঁটিহাঁটি পা পা করে তিনি আজ একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।তার স্নেহা মাশরুম ঘর আজ ব্যাপক পরিচিত।নারীরা নিজেকে স্বাবলম্বী করতে তার মাশরুম ঘরে প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন। আজ আমরা হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তারা এসেছি তার মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ নিতে। আমি নারীদের বলবো, আপনারা ঘরে বসে না থেকে কিছু একটা করেন, নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলুন, সংসার এবং সমাজে আপনার গ্রহনযোগ্যতা বেড়ে যাবে।