মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
19 Sep 2024 03:10 pm
সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম:- কুড়িগ্রাম সদরের মধ্যকুমরপুর মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপারেন্টেট মোঃ আমিনুল ইসলাম রাজা মাদ্রাসায় যোগদানের পরপরই সরকারিভাবে বরাদ্দর টাকা দিয়ে মাদ্রাসার উন্নয়ন করলেও নিয়োগ বাণিজ্য, প্রতিবছর মাদ্রাসার পুকুর বন্ধক রেখে আয়, মাদ্রাসার জায়গায় দোকান কর নির্মাণ করে দোকান প্রতি জামানত ও মাসিক ভাড়া,মাদ্রাসার জায়গায় গাছ লাগিয়ে প্রতিবছর বিক্রি করে তার আয়ের টাকা সমস্ত নিজের পকেটস্থ করেছেন বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে সুচতুর সুপারেনটেন্ট যোগদান করার পর তার পছন্দের লোককে কমিটিতে এনে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদ্রাসার নামে পুকুরটি প্রতিবছর অন্যত্র বন্ধ রেখে বড় ধরনের অর্থ, মাদ্রাসার জায়গায় দোকান ঘর তোলে তার জামানত ও ভাড়া, প্রতিবছর মাদ্রাসার জায়গায় গাছ বড় হলে তা বিক্রি করে সেই টাকা নিজের পকেটে রাখছেন।শুধু তাই নয় দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আনিছুর ও সিরাজুল অনুপস্থিত থাকলেও কৌশলে তাদেরকে উপস্থিত দেখে তাদের বেতন ভাগাভাগি করে নিয়ে আসছেন।
এছাড়াও অনেক শিক্ষককে সিনিয়র স্কেল ধরার নাম করে উৎকোচ আদায় করেছেন কিন্তু ওইসব শিক্ষকের ভাগ্যে সিনিয়র স্কেল জোটেনি।জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেউ মুখ খোলার সাহস পাননি।
এছাড়াও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পাঁচটি পদে তিনি নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণাগার পদে ও অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে আপন দুইজন ভাতিজাকে চাকুরী দিয়েছেন।সচেতন মহলের প্রশ্ন এটা কি বৈষম্য বিরোধী নয় ?একটি সুত্র জানায় প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের তিনটি আলমারি তার নিজ বাড়িতে নিয়ে ব্যবহার করছেন।সব মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন সুপারেন্টেট।
অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখন তিনি একটি দলের সাফাই গাইছেন।ওই দলের তেল মেখে তার দুর্নীতি অব্যাহত রাখতে সেখানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন। যাহা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়েছে কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বাস্তবতা ভিন্ন।একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায় সাবেক এমপি মরহুম তাজুল ইসলাম ক্ষমতায় থাকাকালীন তার সুপারিশে ওই প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ তলা ভবন নির্মিত হয়।
এছাড়াও সাবেক এমপি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলীর কাছে বরাদ্দ নিয়ে মাদ্রাসার গেট, শহীদ মিনার সহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়। এছাড়াও সাবেক এমপি পনির উদ্দিন আহমেদ এর কাছে বরাদ্দ নিয়ে আরেকটি পুকুর ভরাট করা হয়।।
এতসব দুর্নীতি ও অনিয়ম ঢাকতে মাদ্রাসা সুপারেনটেন্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে কোটিপতি বনে যান। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুচতুর সুপারেন্টেট এখন আরেকটি রাজনৈতিক দলের গুনাগুন তুলে সেই দলে যোগদান করে তার অপকর্ম ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। মাদ্রাসার সহকারী সুপারেন্টেট মান্নান জানান, দোকান ভাড়া ও পুকুর বন্দকের টাকার সহ যাবতীয় সব কাজ এককভাবে সুপারেন্টেন করেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা সুপারেন্টেট আমিনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।