বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
17 Sep 2024 11:23 pm
গত সোমবার মোঃ আলী আকবর গোলাপ ও মোঃ সিরাজুল ইসলাম সাচ্চুর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় বগুড়া প্রেসক্লাবে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ইউনিক পাবলিক স্কুল, বগুড়ার চেয়ারম্যান তনসের আলী প্রাং।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে যে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।সম্পত্তিটি নিষ্কন্টকভাবে ক্রয় করা হয়েছে।শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হলে এটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য অপকৌশল গ্রহন করছে এবং আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করছে। আমি মো: তনছের আলী প্রাং ও আমার স্ত্রী মাফরুহা জোয়ায়রা দুজনই শিক্ষক ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত।আমাদেরকে সমাজে হেয় করার উদ্দেশ্যে এ ধরণের সংবাদ সম্মেলন করেছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বগুড়া সদরের মৌজা মালগ্রাম সি.এস খতিয়ান নম্বর ৬১ এর জোত ভূমি রায়তি স্বত্বে ইমামুদ্দিন আহম্মদ নামে ষোল আনা অংশে লিপিবদ্ধ আছে। ইমামুদ্দিন আহম্মদ মারা গেলে স্ত্রী ছলেমান নেছা বেওয়া, পুত্র নিজাম উদ্দিন এবং ৪ কন্যা দৌলতন নেছা, হামেদন নেছা, আবেদন নেছা এবং আশরাফন নেছা ওয়ারীশ থাকে। উক্ত সি.এস খতিয়ানে মোট জমির পরিমান ৩.০৮২৫ একর।
উক্ত খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত নালিশী সাবেক ১১১৫ দাগের ৯৩ শতকসহ মোট ১৮৩.৭৫ শতাংশ জমি অছিম উদ্দিন মোল্যা পিতা মৃত মিয়াজান মোল্যা ১৩ মার্চ ১৯৩৪ সালে ইমামুদ্দিন আহম্মদের উক্ত স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাগণ বরাবর ১৬৫৬ নম্বর একটি বেম্যাদী কবুলিয়ত সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দিয়ে উক্ত জমি কৃষি কাজের নিমিত্তে পত্তন গ্রহন করে।
এরপর অছিম উদ্দিন মোল্যা উক্ত ১১১৫ দাগের ৯৩ শতক জমিতে স্বত্ববান ও দখলকার থাকা অবস্থায় ৫ জানুয়ারি ১৯৪০ তারিখের ১৯১ নম্বর একটি রেজিস্ট্রিকৃত কবলা দলিল মূলে ১১১৫ দাগের ৯৩ শতক জমি সহ অন্যান্য জমি সি.এস খতিয়ানের মালিক ইমামুদ্দিনের পুত্র নিজাম উদ্দিন মাহমুদ বরাবর হস্তান্তর করত স্বত্ব দখল পরিত্যাগ করে।
এরপর অছির উদ্দিন মোল্যা ১১১৫ দাগের ৭৭ শতক জমিতে স্বত্ববান ও দখলকার থাকা অবস্থায় বিগত ১০ জুলাই ১৯৪৬ তারিখের ৮২৩১ এবং ৮২৩২ নং ২টি কবলা দলিল মূলে উক্ত জমি জমিলা খাতুন স্বামী আজিজ আহম্মদ মোহাম্মাদ হোসেন বরাবর হস্তান্তর করে স্বত্ব দখল পরিত্যাগ করে। উক্ত জমি সহ অন্যান্য জমির বাবদ ৯৮ নম্বর এম.আর. আর খতিয়ান উক্ত জমিলা খাতুন সহ অন্যান্যদের শরিকদের নামে প্রস্তুত হয়।
এই জমি বাবদ জমিলা খাতুন নামজারি কেস মূলে পৃথক ভাবে নামজারি করে নেয়। জমিলা খাতুন মারা গেলে অংশ ৪ পুত্র আজহার হোসেন, আকরাম হোসেন, আবু হোসেন, আমির হোসেন ও ৫ কন্যা খুরশিদ বানু, রওশন বানু, আফরুজ বানু, নাছিমা বানু এবং আকতার বানু তাহা প্রাপ্ত হয়। বণ্টননামার ভিত্তিতে নালিশী ১১১৫ দাগের ৭৭ শতক জমি সহ অন্যান্য জমি উক্ত বণ্টননামার ২য় পক্ষ আমির হোসেনের অংশে পড়ে।
এই জমি বাবদ আমির হোসেনের নামে ৮৭২ নম্বর ডি.পি খতিয়ান প্রস্তুত হয় এবং আমির হোসেন নামজারি কেস মুলে পৃথক ভাবে নামজারি করে নিয়ে সরকার সেরেস্তায় খাজনা প্রদান করে দাখিলা প্রাপ্ত হয়। দাখিলা প্রাপ্ত হওয়ার পর উক্ত জমি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড বগুড়া শাখায় মর্গেজ রেখে ঋণ গ্রহন করেন। ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অর্থঋণ মামলা দায়ের হয়।
সোনালী ব্যাংক ও আমির হোসেনের মধ্যে উক্ত অর্থ ডিং মোকদ্দমাটি আপোষে নিষ্পত্তি হয়।
আমির হোসেন ব্যাংকের সাকুল্য ঋণ পরিশোধের জন্য শতাব্দী প্রোপারটিজ এ্যান্ড ডেভলোপারস্ লিঃ এর নিকট হতে ঋণের টাকা নিয়ে ব্যাংক বরাবর পরিশোধ করে। এরপর সোনালী ব্যাংক ৫ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে ১৯২৪৩ নম্বর একটি বন্দক অবমুক্ত দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দেয়। আমির হোসেন ১১১৫ দাগের ৭৭ শতক জমি দখল ভোগ করা অবস্থায় উক্ত দাগের মধ্য হইতে ৪.৩৮ শতক জমি এল.এ কেস নং ২৪/পৌরসভা/২০০৬ মূলে হুকুম দখল হলে হুকুম দখলের ক্ষতিপূরণের টাকা আমির হোসেন নিজে সংশ্লিষ্ট এল.এ অফিস হত উত্তোলন করে।
আমির হোসেন ১১১৫ দাগের ৭২.৬২ শতক, ১১১৮ এবং ৭৩৬ দাগের ৫০ শতক জমি সহ মোট ৭৩.১০ শতক জমি ২৭ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখের রেজিস্ট্রিকৃত ২০৩৯৮ নম্বর একটি কবলা দলিল মূলে শতাব্দী প্রোপারটিজ এ্যান্ড ডেভলোপারস্ লিমিটেড বরাবর হস্তান্তর করে। ক্রেতা নামজারি কেস মূলে ৭২.৬২ শতক জমি পৃথক ভাবে নামজারি করে বগুড়া পৌরসভায় ৫৩২ (০১) পৌর হোল্ডিং খুলে পৌর কর পরিশোধ করে এবং ১২ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে পৌর প্লান অনুমোদন করে নিয়ে নালিশী জমির চতুর পার্শ্বে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করে। আলী আকবর গোলাপ শতাব্দী প্রোপারটিজের বাউন্ডারী নির্মাণের বিষয়ে বগুড়া পৌরসভায় অভিযোগ করলে ৭৬৭/০৯ নং মামলা রুজু হয়। এরপর পৌর মেয়র পক্ষদ্বয়কে শুনানী শেষে উক্ত ৭৬৭/০৯ মোকদ্দমাটি খারিজ করে দেন। বাদীর পিতা নজরুল ইসলাম আমির হোসেন নামীয় খারিজ বাতিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে আপত্তি দাখিল করলে বিগত ২৬ অক্টোবর ২০১১ তারিখে খারিজ হয়। এছাড়া নজরুল ইসলাম আমির হোসেন নামীয় বর্তমান জরিপের পর্চা বাতিলের জন্য সেটেলমেন্ট কার্যালয়ে আপীল দায়ের করলে সেটাও ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে নামঞ্জুর হয়। মোঃ সিরাজুল ইসলাম সাচ্চু কিছু অকার্যকর ও ভূয়া কাজগপত্র তৈরি করে কোর্টে মামলা দিয়ে কোর্টকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছে। সিরাজুল ইসলাম সাচ্চু আমার বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আনয়ন করে।
বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষে শুনানি শেষে ৯ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে তা না মঞ্জুর করেন। সিরাজুল ইসলাম সাচ্চু ৩০৩৭ ডিপি খতিয়ানে জাল করে পৌর হোল্ডিং খোলার চেষ্টা করেছিলো। যা ব্যর্থ হয়। শতাব্দী প্রোপারটিজ লিমিটেড বিগত ১৫ ফেরুয়ারি ২০১৭ তারিখের ২০৩৯৮ নম্বর একটি কবলা দলিল মূলে নালিশী জমি মোঃ তনছের আলী বরাবর হস্তান্তর করে স্বত্ব দখল পরিত্যাগ করে। সম্পত্তিটি নিষ্কন্টকভাবে ক্রয় করা হয়েছে।