শনিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৪
05 Oct 2024 10:46 pm
এস আই সুমন,স্টাফ রিপোর্টার,বগুড়াঃ- বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের রায় মাঝিড়া গ্রামে ইসরা সমিতির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকাল ১০টায়, ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা তাদের সঞ্চয়কৃত আমানত ফেরত চেয়ে লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আপেল মাহমুদের শরনাপন্ন হোন।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর হলো বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বর্তমান ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলামের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আমরা ইসরা এনজিও নামে সমিতিতে প্রতিমাসে টাকা সঞ্চয় রাখি। প্রথম ধাপে এ সমিতির লেনদেন সার্ভিস ব্যবস্থা চমকপ্রদ দেখিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেন। জহুরুল ইসলামের কথামতো এলাকার গরীব, অসহায় নিন্ম আয়ের মানুষেরা সেখানে প্রতি মাসে সঞ্চয় গচ্ছিত রেখে এককালীন মোটা অর্থ পেয়ে স্বাবলম্বি হবে এমনটাই ভেবে তারা গত ১০ বছরে ইসরা সমিতিতে ডিপিএস ও ফিক্সড ডিপোজিটরে সঞ্চয় রাখেন।
একপর্যায়ে অনেকের ১০ বছর মেয়াদি ডিপিএস ম্যাচুয়েড হলে তারা জহুরুল ইসলামের কাছে সমুদায় চেয়ে বসেন৷ এতেই বাঁধে বিপত্তি। এভাবে অনেকেরই ১০ বছর মেয়াদকালপূর্ন হলে টাকা আনতে গেলে সময় কালক্ষেপণ করে জহুরুল ইসলাম। একপর্যায়ে সে ওই চলমান সমিতির টাকা উত্তোলন করা হঠাৎ বন্ধ করে দেন। ১০ বছর ম্যাচুয়েড গ্রাহকেরা তাদের টাকা ফেরৎ চাইলে জহুরুল ইসলাম তাদের সাথে তালবাহানা শুরু করেন বলে তারা অভিযোগে বলেন৷ অতপর তিনি সকল গ্রাহকদের বলেন, আমি আর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করি না। আপনারা অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করুন। এর পরেই সকল গ্রাহকের মাথার ওপর যেনো কালো মেঘ বাসা বাঁধে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সুরাইয়া বেগম বলেন, খেয়ে না খেয়ে সংসার থেকে বাচিয়ে মাসে মাসে টাকা ডিপিএস করে জহুরুল মেম্বার কে দিয়েছি। আমার ডিপিএস ১০ বছরে পরিশোধ হয়েছে। কয়েক মাস যাবৎ জহুরুল মেম্বারের কাছে ঘুরেও টাকা পাচ্ছি না। এখন বুঝতে পারছি আমাদের সাথে প্রতারনা করা হয়েছে। একই ভাবে বৃদ্ধা লিলি বেগম বলেন, সংসাদের মুষ্টি চাইল ও হাঁস মুরগির ডিম বিক্রি করে ইসরা সমিতিতে সঞ্চয় রেখেছি। এখন আসল টাকা ফেরৎ চাইছি তাও পাচ্ছি না। একই ভাবে অভিযোগ করেছেন কৃষক আবুল খায়ের, নুরুন্নাহার বেগম, পাপিয়া আক্তার, আব্দুল্লাহ সহ একাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক।
এ বিষয়ে লাহিড়ীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আপেল মাহমুদ বলেন, ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সবাই আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। তারা ইসরা সমিতি নামে একটি এনজিও দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। অনেকেই ১লাখ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ডিপিএসে রেখেছে। বিষয়টি মৌখিক ভাবে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন কে অবগত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের ভিতর যদি এসব অসহায় নিম্ম আয়ের মানুষদের আমানত ঠিক মত বুঝিয়ে না দেওয়া হয়। তাহলে আমি নিজে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এবিষয়ে ইসরা এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মরত জহুরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ২০১২ সালে ইসরা এনজিওতে চাকুরি করেছি। আমার সমস্যাগত কারনে ২০২৩ সালে চাকরি বাদ দিয়েছি। অনেকেই অফিসের সাথে যোগাযোগ করে টাকা তুলেছে। অন্যান্য সদস্যরা যদি আমার সহযোগিতা নেয় আমি টাকা তুলে দিবো। তিনি অভিযোগ এড়িয়ে বলেন আমার কাছে সীট রয়েছে এসব ভিত্তিহীন।