রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
12 Nov 2024 05:11 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার মাটিতে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বানচাল করে কাউকে লাভবান হতে দেওয়া হবে না।
রোববার নিজ সরকারি বাসভবন গণভবনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন-২০২৩ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন তিনি। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন ।
যারা আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মতো জঘন্য হামলা চালানোর নির্দেশ দেয় এবং যারা সেই নির্দেশ পালন করে তাদের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এক মা তার ছোট সন্তানকে বাঁচাতে বুকে আঁকড়ে ধরে ছিল, সেভাবেই তারা পুড়ে মারা গেল। আমরা এ ধরনের দৃশ্য দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, বাস-ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহনে আগুন দিয়ে লাভটা কি? মানুষ হত্যা, রেললাইনের ফিশপ্লেট উপড়ে ফেলে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি করে তারা কী অর্জন করেছে? এটা কোন ধরনের রাজনীতি- আমি জানি না।
মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা মহাপাপ ও অন্যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ অন্যায় সহ্য করা যায় না। কোনো ধর্মগুরুও এটা মেনে নিতে পারেন না। মানবতার জন্য যিশু খ্রিস্ট তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবতা ও মানবজাতির কল্যাণই সব ধর্মের মূল কথা। আমরা সেই বিশ্বাস থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। এদেশের মাটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা নির্বিশেষে সবার। এখানে সবাই স্বাধীনভাবে বসবাস করবে। আমি সবার কল্যাণ ও উন্নয়ন কামনা করি।
বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়ায় সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। এই দেশে ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এ অঞ্চলের মানুষ হাজার বছর ধরে ধর্মীয় সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছে
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছি।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবতা প্রচারের মহৎ উদ্দেশ্যে জীবন উৎসর্গকারী যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থানে শিশু ও নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখনই আমি সুযোগ পাচ্ছি, বারবার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। বড়দিন উপলক্ষে দেশে-বিদেশে অবস্থানকারী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনকে শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, আর্চবিশপ বেজয় নাইসেফরাস ডি'ক্রুজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি জুয়েল আরং এমপি, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, ধর্ম মন্ত্রণায়ের সচিব মো. এ হামিদ জমাদ্দার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান লীগের সভাপতি ড্যানিয়েল নির্মল ডি. কস্তা এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত আই কোরায়া।