সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
19 May 2024 10:51 am
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ-আজ ১০ ডিসেম্বর। সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে হেরে রাতের আঁধারে পাকিস্তান সেনারা পালিয়ে যায়। তাদের দোসর, রাজাকার, আল-বদর বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সুন্দরগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উড়ান মুক্তিযোদ্ধারা।
দিবসটি উপলক্ষে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ভারতের দার্জিলিংয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শেষে ৬নং সেক্টর কমান্ডার এয়ার ভাইস মার্শাল খাদেমুল বাশার, কোম্পানি কমান্ডার শাহ নেওয়াজ এবং গাইবান্ধার দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে ভারত সীমানা পার হয়ে পাটগ্রাম, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী এলাকার রণক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখে সুন্দরগঞ্জ থানার উদ্দেশে অগ্রসর হতে থাকেন। এর আগে ভূরুঙ্গামারীতে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে তাদের যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অন্তত ২৪ থেকে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভূরুঙ্গামারী হানাদার মুক্ত হয়। পরে সুন্দরগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা রওনা দেন। পথে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র নদী পার হওয়ার চেষ্টা করলে পাকিস্তান সেনারা গুলি ছোড়ে। তাদের গুলিতে আব্দুল জলিল নামে ময়মনসিংহের একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
এরপর ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধারা হেড কোয়ার্টারে প্রবেশ করেন। পরে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা একত্রিত হন সেখানে। তারা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অভিযান চালান। ৮ ডিসেম্বর গাইবান্ধা মহকুমার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী হলহলিয়া নামক ব্রিজটি বোমা মেরে উড়িয়ে দিলে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শুরু হয় তুমুল লড়াই। যুদ্ধের এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে। পরে তারা পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
শেষে ১০ ডিসেম্বর ২৫০ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। সুন্দরগঞ্জ থানাকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন মুক্তিযোদ্ধারা।