বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
06 May 2024 06:02 pm
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:- আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী নেতাকর্মীদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। যার ফলে আগামী ৭ জানুয়ারির আসন্ন জাতীয় নির্বাচন দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বলে দাবি করেছে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন (আইএইচআরসি)।
আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ (বুধবার) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন, বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট এম এ হাশেম রাজু।
বিবৃতিতে এম এ হাশেম রাজু বলেন, “আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন সরকারি দল কর্তৃক দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিথ্যা মামলা ও পুলিশি নির্যাতনের ভয়ে ঘরছাড়া। রাত কাটে বিলে আবার কখনও বনজঙ্গলে। লাখ লাখ নেতাকর্মী পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ভয়ে যাযাবর জীবনযাপন করছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ব্যবসা—বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পরিবার চরম সংকটে পতিত হয়েছে। অভিযানে গিয়ে পুলিশ পরিবারের সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করছে, নেতাকে না পেয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে মা—বাবা—ভাইবোনসহ স্বজনদের। নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন অনেক বিরোধী নেতাকর্মী। মারা যাওয়া, গুম হওয়া নেতাকর্মীদেরও রাজনৈতিক মামলা সাজা দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের তালিকা তৈরি ও বাসা—বাড়ি চিনিয়ে দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ভেঙ্গে পড়ছে গ্রামীণ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ। বিরোধী নেতাকর্মীদের আটক করে মারধরের পর হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পুলিশে দিচ্ছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীনরা বিরোধী মত দমনে মামলা ও গ্রেফতারকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। গত ৩ মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩১ হাজার নেতাকর্মীকে, মামলা দায়ের করা হয়েছে ১১৬০টি, আসামি করা হয়েছে ৭৯৭৭৮ জনকে, আহত হয়েছেন ৮৬০৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের, মৃত্যুদন্ডাদেশ সহ সাজা হয়েছে ৫৮৮ জনের বেশি বিরোধী নেতাকর্মীর। এ সময় ছেলেকে না পেয়ে বাবাকে হত্যার মতো অমানবিক ঘটনার সাক্ষীও আমাদের হতে হয়েছে। মরহুম এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার মতো স্বনামধন্য একজন আইনজীবীকেও মৃত্যুর পর মামলার আসামী করা হয়েছে। হৃদরোগ আক্রান্ত যশোরের এক কলেজ শিক্ষকদের গ্রেফতারের পর ডান্ডাবেড়ি পড়িয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এসব বিষয়ে দেশের উচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশনাও অমান্য করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযান ও হামলা উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে ১ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ।
আইএইচআরসি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে এখন চরম ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোন আগ্রহ জন্মায়নি। জাতিসংঘ—যুক্তরাষ্ট্র—ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমারাও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাই আমরা মনে করি, রাজনৈতিক সমঝোতায় গিয়ে সকলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান না করে বর্তমান পরিস্থিতি বজায় রেখে যদি একটি এক তরফা জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয় তবে তা বিশ্ব স্বীকৃতি পাবে না।
এড. মির্জা জিয়াউদ্দিন আহমেদ,প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারী,ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার)