বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩
16 Nov 2024 05:51 am
৭১ভিশন ডেস্ক:- সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আগামী শুক্রবার। ২০১৯ সালের এই দিনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ঢাকাসহ সারা দেশে কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং স্মরণসভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তাকে স্মরণ করবে জাতীয় পার্টি।
ঢাকায় জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল ৮টায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত হবে।
বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি। স্মরণসভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। পরে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে।
এরশাদের স্মরণে রাজধানীর শ্যামপুর ও জুরাইনে দলটির কো-চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার উদ্যোগে জাতীয় পার্টি তিন দিনের কর্মসূচি পালন করবে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। এছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসেন। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৯১ সালে এরশাদ গ্রেফতার হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় এরশাদ ৫টি করে আসনে বিজয়ী হয়ে রেকর্ড করেন। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয়ী হয়। এরপর দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চলতি একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই অসুস্থ হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ। কিন্তু রওশন এরশাদও গুরুতর অসুস্থ। বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচিত হন জিএম কাদের। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের এখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।