বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩
17 May 2024 09:48 am
শিবলী সরকার,৭১ভিশন প্রতিনিধিঃ-বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জনৈক এক গৃহবধূর নিকট হইতে ১০লাখ টাকা যৌতুক নিয়েছেন রিমন মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্য। সে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চৌকিবাড়ী গ্রামের আব্দুল আকন্দের ছেলে। ঐ গৃহবধু জানান, ২০১৯ সালে রিমনের সাথে তার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়, এসময় তাহার পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রিমন মিয়া। মেয়ের সুখের কথা ভেবে এতিম শিলু আক্তারের মা এবং মামারা তার বাবার জমি বিক্রি করে রিমন কে ১০লাখ টাকা পরিশোধ করে। তাদের সংসারে ৫মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
পরে তাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে কোন এক কারনে অবনতি হতে শুরু করে। এর কারন হিসেবে ঐ মেয়েটা দাবী করেন তাহার স্বামী পরোকীয়া প্রেমে জরিয়ে গিয়েছিলো, প্রায় সময় তার সাথে খারাপ আচরন করতেন এবং সংসারে অশান্তি হতে শুরু করে। সে দাবী করেন তার স্বামী রিমন মিয়া স্থানীয় কাটাখালি এলাকার এক ডিভোর্স প্রাপ্ত মেয়ে কে মোটা অংকের টাকা নিয়ে গোপনে বিয়ে করেছেন। এবং সেই টাকা আমাকে দিয়ে মিটমাট করতে চান। এই ২য় বিয়ের ব্যপারে কোন প্রমান দিতে পারে নাই শিলু আক্তার। তবে সে জানায় গাবতলী উপজেলায় রিমনের কোনো এক আত্নীয়র বাড়ীতে এই বিয়ে হয়েছে এবং উহা গোপন রাখা হয়েছে।
পরে পরিবারের পরামর্শে এই ঘটনায় শিলু আক্তার রিমনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন আদালতে। সেখানে রিমন মিয়া শুনানি কালে শিলু আক্তার কে নিয়ে রিমন সংসার করবে বলে জানান। পরে মামলাটি লিগ্যাল এইডে মিমাংসার জন্য দেওয়া হলে শিলু আক্তার মিমাংসা করতে রাজি হয়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
অপরদিকে এই ঘটনায় শিলু আক্তার রিমনের কর্মস্থল এপিবিএন-১২ তে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ছিলেন বলে জানান। দায়ের করা অভিযোগটি শিলু আক্তার এর বাড়ীতে এসে তদন্ত করার কথা থাকলেও অসহায় অবস্থায় শিলুকে দফায় দফায় ১২ এপিবিএন ঢাকায় যাতায়াত করতে হয়েছে অনেক বার। নবজাতক কে নিয়ে বার বার যাতায়াতের কথা বলতে কষ্টে কান্নায় ভেঙে পরেন সে। সেখান থেকে তাকে কোনো টিএডিএ দেওয়া হয়নি।
২০০৯ সালে জারিকৃত মহামান্য হাইকোর্টের একটি প্রজ্ঞাপন অনুসারে কোন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা হলে উহা মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত কে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান থাকলেও, অজানা কারনে আদালতের বিধান অমান্য করে অভিযুক্ত রিমন মিয়া এখোনও চাকরিতে সংযুক্ত রাখা হয়েছে। তাহার বিরুদ্ধ্যে গুরুতর অপরাধের সত্যতা থাকলেও যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি ও তাকে বরখাস্ত করা হয়নি।
এছাড়াও সরকারি নিয়োগ বিধান অনুযায়ী পুলিশের চাকরিতে যোগদানের শর্তে অবিবাহিত হতে হয়। সেখানে বিয়ে করে সেই বিয়ে গোপন করে পুলিশে চাকরি নিয়েছেন রিমন মিয়া।সত্যতা রয়েছে যে, ২০১৯ সালে বিয়ে করেন রিমন মিয়া বিষয়টি গোপন করে অনৈতিক পন্থায় চাকরিতে প্রবেশ করেন সে।পরবর্তীতে ২০২২ সালে অযুহাত দেখিয়ে আরো একবার কাবিন করে শিলূ আক্তার কে বিয়ে করেন রিমন মিয়া।এমন দুইটি কাবিননামা দেখা যায় শিলু আক্তারের কাছে। তার এই বিয়ে গোপন করে চাকরিতে প্রবেশ করা রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা করার সামিল হলেও এখনো এই বিষয়ে ব্যাস্থা নেওয়া হয়নি। প্রথম কাবিন নামা ভুয়া দাবী করে রিমন মিয়া একটি মামলা করলে সেই মামলা তদন্ত করে চুরান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা ।
বিয়ে গোপন করার বিষয়ে সারিয়াকান্দি সদরের বিবাহ নিবন্ধক কাজী আমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে সে জানান, রিমনের দুইটি কাবিন নামা সত্য এবং রিমনের দারা সাক্ষরিত। এই বিষয়ে সি আই ডি টিম কে যথাযথ তথ্য দিয়েছি। বিষয়টি দীর্ঘদিন তদন্তধীন থাকার পরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এই বিষয়ে চুরান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত রিমন মিয়া জানান, তাহার বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং প্রতিহিংসা মুলক। শিলুর পরিবার তাহাকে কোনও প্রকার টাকা দেয়নি। বিষয়টি স্থানী প্রশাসন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। শিলু আক্তার দেনমোহরের টাকা চাইলে সে দিয়ে দিবে বলে জানান। এছাড়াও রিমন মিয়া শিলু আক্তারের বিরুদ্ধে পরকিয়া সম্পর্কের অভিযোগ করে বলেন, যে শিলু আক্তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জরিত।